রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: প্রতিদিনই একটু একটু করে বাড়ছে তিস্তার পলির স্তর। শিলিগুড়ির দ্বিতীয় জলপ্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখে এসে প্রাথমিকভাবে এমনই রিপোর্ট দিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা। ফলে আর্থিক বরাদ্দ থাকলেও প্রকল্পের কাজ এখনও অনিশ্চয়তার মুখে।
কীভাবে দীর্ঘকালীন মেয়াদে জল পাওয়া সম্ভব তা জানতে দু’দিন ধরে এলাকা ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করবেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি পুরনিগমের থেকেও বেশ কিছু তথ্য চেয়েছেন তাঁরা। সেই তথ্য পেলে বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবেন। সেই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী কাজ করবে শিলিগুড়ি পুরনিগম। মঙ্গলবার বিকেলে পুরনিগমে বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেয়র গৌতম দেবের বক্তব্য, ‘ওঁরা আমাদের থেকে বেশ কিছু তথ্য চেয়েছেন। সেগুলি দিয়ে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে দেবেন। তারপর বাকি কাজ করা হবে।’
সিকিমে হ্রদ বিপর্যয়ের পর পলিতে ভরছে তিস্তা। যে কারণে শিলিগুড়ির দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের নকশা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে নতুন করে সমীক্ষা করার দায়িত্ব দিয়েছে শিলিগুড়ি পুরনিগম। সেইমতো বিভাগের অধ্যাপক ডঃ পঙ্কজ রায়ের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি দল শিলিগুড়িতে এসেছে। মঙ্গলবার সকালেই দলটির সদস্যরা শিলিগুড়িতে এসে পুরনিগমের বাস্তুকারদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর চলে যান গজোলডোবায় দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের কাজ দেখতে।
প্রস্তাবিত যে এলাকা থেকে জল তোলার কথা ছিল সেই এলাকাও ঘুরে দেখেন বিশেষজ্ঞরা। পুরনিগম সূত্রে খবর, হ্রদ বিপর্যয়ের আগে ওই এলাকায় যে পরিমাণ পলি ছিল তাতে আগামী ৩০ বছর পর্যন্ত জল পাওয়া যেত। কিন্তু বিপর্যয়ের পরই পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, পলির পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এখন ওই এলাকা থেকে খুব বেশি হলে পাঁচ বছর জল পাওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে দেখে এসে এই রিপোর্টই দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই পুরনিগমের কাছে পুরোনো তথ্য চেয়েছেন তাঁরা।
হ্রদ বিপর্যয়ের আগে কী পরিমাণ পলি ছিল, পরে কতটা বেড়েছে, প্রতিদিন কী পরিমাণ পলি বাড়ছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। বুধবার সকালের মধ্যেই পুরনিগমের তরফে ওই তথ্য দেওয়া হবে বিশেষজ্ঞদের। এরপর ফের এলাকায় যাবেন তাঁরা। কোন জায়গা থেকে দীর্ঘকালীন (অন্তত ৩০ বছর) মেয়াদে জল উত্তোলন করা সম্ভব, তা সমীক্ষা করে রিপোর্ট দেবেন।
এদিনের বৈঠকে বরাতপ্রাপ্ত সংস্থাকেও ডাকা হয়েছিল। ওই বৈঠকের পর ফের পুরনিগমের মুখ্য বাস্তুকার, কমিশনার সহ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র।
