নীহাররঞ্জন ঘোষ, মাদারিহাট: তীব্র খরায় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের (Jaldapara National Park) কুনকিদের খাদ্যসংকট প্রকট হয়েছে। জানা গিয়েছে, গত দু’মাস ধরে কুনকিদের খাদ্যসংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। কুনকিদের প্রিয় ঢাডডা, পুরুন্ডি, চেপ্টি, নল, মদুয়া, হোগলা, খাগড়ি, কাশিয়া, লড়ং জাতীয় ঘাসের অভাব দেখা দিয়েছে।
এদিকে অন্য তৃণভোজী প্রাণীরা মাটিতে মুখ লাগিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ঘাস খেতে পারলেও হাতিদের পক্ষে সেটা খুব কষ্টের। ওরা সাধারণত দাঁড়িয়ে থাকা বড় ঘাস খেতে পছন্দ করে। কিন্তু দীর্ঘ খরায় জলদাপাড়ার এই ধরনের বড় ঘাস শুকিয়ে গিয়েছে। আর যতটুকু বেঁচে আছে জলদাপাড়ায় ঘাঁটি গেড়ে থাকা ৫০-৬০টি বুনো হাতির দল সেইসব ঘাস খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে। ফলে কুনকিদের খাদ্যসংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। যদিও এর জন্য আরও একটি কারণ রয়েছে বলে বনকর্মীদের একাংশ জানান।
জানা গিয়েছে, ২০২০ সাল থেকে তিন বছর জলদাপাড়ায় এক ছটাক জমিতে ঘাস লাগানো হয়নি। ফলে আগের লাগানো ঘাস প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। গতবছর আবার ঘাস লাগানো হয়েছে। তবে নতুন ঘাস লাগানোর পর কমপক্ষে দুই-তিন বছর লাগে বড় হতে। এই ঘাসের প্ল্যান্টেশন তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখতে হয়। যাতে বন্যপ্রাণীরা নষ্ট না করতে পারে। তিন বছর পর গতবছর যে ঘাস লাগানো হয়েছিল সেই ঘাস বড় হতে আরও এক বছর লাগবে। এদিকে ঘাসের অভাবে কুনকিদের অধিক পরিমাণে কলা গাছ খেতে দিতে হচ্ছে। জলদাপাড়ার প্রাণী চিকিৎসক উৎপল শর্মা জানান, হাতিদের সবসময় মিক্সড খাবার পছন্দ। যেমন বিভিন্ন রকমের ঘাস। বেশি কলা গাছ খেলে শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। সূত্রের খবর, খাদ্যসংকটে নতুন ঘাসের প্ল্যান্টেশনের বেড়া ভেঙে প্রায় হাতি, গন্ডার, বাইসন ঢুকে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে জলদাপাড়ায় রয়েছে ৮২টি কুনকি। তাদের মাথাপিছু প্রতিদিন প্রয়োজন ১৫০ কিলোগ্রাম থেকে ২৫০ কিলোগ্রাম খাবার।