অনসূয়া চৌধুরী ও অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: শীতের সন্ধ্যায় বিরিয়ানি কেনাকে কেন্দ্র করে শিশু নিগ্রহের অভিযোগ (Child Harassment Case) উঠল জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরে। ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্ধ্যার পরিবেশ। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে শহরের কদমতলায় এক বিরিয়ানির দোকানে। সেখানে খাবার কিনতে এসে শিশুটি নিগ্রহের শিকার হয়। তাকে দোকানের দুই কর্মী তুমুল মারধর করে বলে অভিযোগ। শিশুটির চিৎকারে ঘটনাস্থলে আসেন সেখানে কর্তব্যরত এক ট্রাফিক পুলিশের কর্মী। ঘটনায় জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে দোকান ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। খবর যায় কোতোয়ালি থানায়। শেষপর্যন্ত ওই দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। দুজনই ঘটনার সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের নাম রঞ্জিত দাস ও সানি মাহাতো। তারা জলপাইগুড়ির বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে। জখম বাচ্চাটিকে হোমে পাঠায় পুলিশ। বুধবার ধৃত দুজনকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়।
সূত্রের দাবি, আহত শিশুটির বাড়ি জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। বাড়িতে মা-বাবা ছিল না। দুই দিদি রয়েছে। বাড়িতে তাকে তেমন দেখভালের ব্যবস্থা না থাকায় পুলিশ বাচ্চাটিকে হোমে পাঠিয়ে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, আটকরা স্বীকার করেছে যে তারা বাচ্চাটিকে এঁটো বিরিয়ানি দিচ্ছিল। সে ওই খাবার নিতে অস্বীকার করে চিৎকার-চ্যাঁচামেচি করে। তখনই মেজাজ হারিয়ে তারা তাকে চড়-থাপ্পড় মারে। উদ্ধারকারী ওই পুলিশকর্মী জানান, তিনি তখন ডিউটিতে ছিলেন। বাচ্চাটির চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারেন তাকে এঁটো বিরিয়ানি দেওয়া হচ্ছিল। সে তা নিতে অস্বীকার করায় দোকানের দুই কর্মী তাকে চড়, ঘুসি মারে।
প্রত্যক্ষদর্শী রোহিত মৈত্র বলেন, ‘আমি হট্টগোল শুনে এসে দেখি বাচ্চাটিকে মাটিতে ফেলে ওই বিরিয়ানির দোকানের দুই নেশাগ্রস্ত কর্মী মারধর করছিল। পরে এক ভদ্রলোক এসে তাকে উদ্ধার করে। দোকান মালিকের বোঝা উচিত, নেশাগ্রস্ত এমন কর্মীদের দোকানে রাখা উচিত নয়।’
ঘটনার খবর পেয়ে শিশু চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সম্পাদক মধুমিতা দাস কদমতলায় আসেন। তিনি বাচ্চাটিকে চিকিৎসার জন্য জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে সোজা কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যান। শারীরিক নির্যাতনের কথা জানতে পেরে সেখানে ততক্ষণে এসে হাজির হয় স্থানীয় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (সিডব্লিউসি)-র সদস্যারা।
এব্যাপারে বিরিয়ানি দোকানের মালিক বিজন চন্দ বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি দোকানে ছিলাম না। কর্মীদেরও পারিশ্রমিক দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু মদ্যপ অবস্থায় ওরা দোকানে ফিরে এসে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি কোনওভাবেই এই ঘটনাকে সমর্থন করি না।’