জলপাইগুড়ি: মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জঙ্গল এলাকা থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে এবার বড় সমস্যা হতে পারে ঘন কুয়াশা। ভোরবেলায় বন্যপ্রাণীর উপদ্রব বিশেষ করে হাতির হানা হতে পারে। তাই ফগলাইট, হাইপাওয়ার সার্চলাইট, হাই রেজোলিউশনের লাইট ব্যবহার করবে বন দপ্তর। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে নিরাপদে পৌঁছে দিতে বন দপ্তর এবার ফগলাইট ও হাই রেজোলিউশনের সার্চলাইট ব্যবহার করবে। পরীক্ষার সময় এগিয়ে আসায় জঙ্গল লাগোয়া এলাকা থেকে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে আসতে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না বন দপ্তর। বনবস্তিগুলির বাইরে জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় রাজ্যজুড়ে বন্যপ্রাণী উপদ্রুত এলাকায় ৪০০টি ড্রপগেট তৈরি করেছে বন দপ্তর। বনকর্মীদের ভোর ৫টা থেকে ডিউটিতে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য অন্যান্য গাড়ির পাশাপাশি বন দপ্তরের বিশেষ যান ঐরাবতকেও পরীক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া আসার জন্য ব্যবহার করা হবে। সমস্ত বনবস্তি ও জঙ্গল সংলগ্ন এলাকা যেখানে পরীক্ষার্থীরা থাকে সেইসমস্ত এলাকাকে বন দপ্তর থেকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) অরণ্য ভবনে গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগ, জলপাইগুড়ি বন বিভাগ, বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগ ও কালিম্পং বন বিভাগের মধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে জরুরি বৈঠক হয়।
তবে জঙ্গলমহল থেকে আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বক্সা ব্যঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকায় ৪০০টি ড্রপগেট করা হয়েছে। এই ড্রপগেট দিয়ে চলাচল বন্ধ করা হচ্ছে। গত বছর মহারাজঘাটের যে জঙ্গলপথে পরীক্ষার্থী অর্জুন দাসের হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছিল সেই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে বন দপ্তর।
এদিন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ফোনে জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ির সামনে থেকে নিয়ে আসা, ফের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় কোতোয়ালি থানার অধীন মহারাজঘাট এলাকার জঙ্গল রাস্তায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মারা যায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন দাস। এবার রাজ্য প্রশাসন ও বন দপ্তর অনেক আগে থেকেই পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে পরিকল্পনা করেছে।
জলপাইগুড়ি বন বিভাগের ডিএফও বিকাশ ভি বলেন, ‘গতবার এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের ভাবিয়ে তুলেছিল। এবার বন বিভাগের সহযোগিতা এবং প্রশাসনিক ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
জঙ্গল রাস্তায় বনকর্মীরা প্রয়োজনীয় আগ্নেয়াস্ত্র, লাইট, বাইনোকুলার, ফগলাইট নিয়েই বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি দেখে তবেই পরীক্ষার্থীদের নিয়ে আসবেন পরীক্ষাকেন্দ্রে। প্রতি রেঞ্জে বন দপ্তরের একাধিক গাড়ি থাকবে। ঐরাবত গাড়িটিকেও রাখা হচ্ছে। প্রশাসন আলাদা করে গাড়ির ব্যবস্থা করেছে। পরীক্ষার্থীদের কোনও শর্টকাট রুট দিয়ে বনকর্মীদের নিয়ে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের জেলা কনভেনার সুগত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘জেলায় এবার ২৫ হাজার ৭০০ জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। সবক’টি পরীক্ষাকেন্দ্র স্পর্শকাতর। সিসিটিভি ক্যামেরা সব কেন্দ্রে বসানো হচ্ছে। মোট পরীক্ষাকেন্দ্র ৯৭টি। ১০ হাজার ৭০০ জন ছাত্র এবং ১৫ হাজার ছাত্রী পরীক্ষা দেবে।’
বন দপ্তরের (Forest department) পরিকল্পনা ফগলাইট, হাইপাওয়ার সার্চলাইট, হাই রেজোলিউশনের লাইট ব্যবহার করবে বন দপ্তর।বন্যপ্রাণী উপদ্রুত এলাকায় ৪০০টি ড্রপগেট তৈরি করেছে বন দপ্তর। বনকর্মীদের ভোর ৫টা থেকে ডিউটিতে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের কোনও শর্টকাট রুট দিয়ে বনকর্মীদের নিয়ে যেতে নিষেধ করা হয়েছে