অনসূয়া চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: হাত নেই তো কী হয়েছে? পা তো রয়েছে! তা দিয়েই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) সুভদ্রা নন্দী। পা দিয়ে সুপারি (betel nut) ছুলেই দিদির পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। সুভদ্রার লড়াই যেন আরেকবার দেখিয়ে দিল একটা অঙ্গ না থাকলে জীবন থমকে যায় না।
সুভদ্রার জীবন কাহিনী সিনেমার প্রেক্ষাপটকেও হার মানাবে। জন্ম থেকেই বাহুমূল থেকে দুই হাত নেই। পরিবারের সবাই কষ্ট পেলেও মেনে নিয়েছিলেন। তাই তো ছোটবেলা থেকে তাঁর এই অক্ষমতা বড় হয়ে ওঠেনি। দিদি জ্যোৎস্না সবসময় বলেছেন, অভ্যাস করলেই সব শেখা যায়। দিদির কথা মেনে পা দিয়ে লেখা, খাওয়া সব শিখেছেন। এখন এই পা দিয়েই সুপারি ছুলে জীবিকানির্বাহ করছেন।
বামনপাড়ার (Bamanpara) বাসিন্দা সুভদ্রার শিক্ষাগত যোগ্যতা অবশ্য পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। তারপর আর্থিক অনটনে পড়াশোনা করতে পারেননি। কিন্তু তাতে থেমে থাকতে নারাজ তিনি। অনেক কাজ খুঁজেছিলেন, শেষে সুপারি ছুলে উপার্জন করছেন।
তাঁর কথায়, ‘সরকারি সাহায্য যা পাই, তা দিয়ে এতজনের চলা সম্ভব নয়। আর কাজ না করে কারও ওপর নির্ভর করে জীবন কাটাতে চাই না। তাই স্বাবলম্বী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’ সুপারি ছুলে যে টাকা পান, সেটা দিদির সংসারে দেন।
বোনকে নিজের পায়ে দাঁড় করাতে তাঁর সঙ্গে সমান পরিশ্রম করেছেন জ্যোৎস্না। তিনি জানান, বোনকে ছোটবেলা থেকে পরিশ্রম করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। হাত না থেকেও জীবনের লড়াইয়ে জেতা যায়, সেটা বারবার বলা হয়েছে। দিদির থেকে শিক্ষা নিয়ে আর পাঁচজনের মতো না হয়েও যে পরিবারের পাশে দাঁড়ানো যায়, সেটা দেখিয়ে দিয়েছেন সুভদ্রা। এভাবেই ভালো থাকুন সুভদ্রার মতো নারীরা৷