অভিরূপ দে, ময়নাগুড়ি: পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এবারও জল্পেশের শ্রাবণীমেলায় (Srabani Mela) স্কাইওয়াক ব্যবহার করতে রাজি নয় মন্দির (Jalpesh Mandir) কর্তৃপক্ষ। স্কাইওয়াকের (Jalpesh Skywalk) কাজ নিম্নমানের হওয়ায় এই বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্কাইওয়াকের লোহার রেলিংয়ের ওপর স্টিলের হাতল লাগানো নেই। এছাড়া, প্রায় কুড়ি ফুট ওপরের স্কাইওয়াকের চারদিকে কোনও নেট লাগানো নেই বলে অভিযোগ। ফলে পুণ্যার্থীরা যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্দির ট্রাস্টি বোর্ড। ওই বোর্ডের সম্পাদক গিরীন্দ্রনাথ দেবের কথায়, ‘স্কাইওয়াকে পুণ্যার্থীদের কোনও রকমের নিরাপত্তা নেই। আমরা দায়িত্ব নিয়ে পুণ্যার্থীদের স্কাইওয়াক ব্যবহার করতে দেব না। মুখ্যমন্ত্রী জল্পেশ মন্দিরের উন্নয়নে কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে নিম্নমানের কাজ হয়েছে।’
দোরগোড়ায় জল্পেশের শ্রাবণীমেলা। মেলা শুরুর আগে জল্পেশে তৈরি হওয়া স্কাইওয়াকের কাজ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
জল্পেশ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের অভিযোগ, পুণ্যার্থীদের স্কাইওয়াকে ওঠার সময় নিরাপত্তার জন্য ঘর তৈরির কথা থাকলেও সেটা তৈরি হয়নি। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় ডিভাইডার নেই। শুধু তাই নয়, স্কাইওয়াক থেকে মন্দিরের দিকে নামার চওড়া সিঁড়িতেও মাঝের অংশে পুণ্যার্থীদের ধরার মতো কোনওকিছু নেই। একসঙ্গে অনেক পুণ্যার্থী স্কাইওয়াক দিয়ে নামতে গেলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নরেশচন্দ্র রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।
২০২০ সালে কোচবিহার সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জল্পেশ মন্দিরের উন্নয়ন প্রকল্পে ৫ কোটি টাকার আর্থিক বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেন। এরপর জেলা জজ, জেলা শাসক, জল্পেশ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে হাইপাওয়ার কমিটি গঠন করে কাজের রূপরেখা তৈরি হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মাধ্যমে ২০২১ সালে কাজ শুরু হয়। এরমধ্যে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে স্কাইওয়াক ও মার্কেট, টিকিট কাউন্টার তৈরি হয়েছে। তবে এখনও অনেক কাজ বাকি থাকায় ক্ষুব্ধ জল্পেশ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ড।
আর যা কাজ হয়েছে তা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠছে। স্কাইওয়াকে গেটের কোনও ব্যবস্থা নেই। স্কাইওয়াকের নিচের তলায় যে মার্কেট তৈরি করা হয়েছে সেই কাজের মানও খারাপ। অল্প বৃষ্টিতেই সেখানে বিল্ডিংয়ের ভিতরে জল জমে যাচ্ছে। এব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে এবারো শ্রাবণীমেলার সময় স্কাইওয়াকের বদলে পুণ্যার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোলা আকাশের নীচেই অপেক্ষা করতে হবে।