পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: ভারত-বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ‘গোল্ডেন রুট’-এ ফের দার্জিলিং মেল চালানোর প্রস্তাব উঠল। প্রস্তাবক জলপাইগুড়ির সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত রায়। শিয়ালদা (Sealdah) থেকে গেদে সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) পার্বতীপুর, দর্শনা হয়ে চিলাহাটি দিয়ে হলদিবাড়ি ঢুকে জলপাইগুড়ি হয়ে এনজেপি পর্যন্ত চালানোর প্রস্তাব দিয়েছেন সাংসদ। দু’দেশের পর্যটন বিকাশ ও যাত্রী পরিষেবা উন্নতিতে রেলের পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রককেও এই প্রস্তাব দিলেন সাংসদ। এখন হলদিবাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি, এনজেপি থেকে শিয়ালদা যেতে দার্জিলিং মেলের (Darjeeling Mail) সাড়ে ১১ ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু পুরোনো ‘গোল্ডেন রুট’-এ চললে সময় লাগবে সাত থেকে আট ঘণ্টা। তবে দুই দেশের রেল পরিকাঠামোর উন্নতি হওয়ায় ওই রুটে অনেক নতুন স্টেশন যুক্ত হবে বলে সাংসদের দাবি।
১৮৭৮ সালে প্রথম যাত্রা শুরু করে দার্জিলিং মেল। তখন ট্রেনটি শিলিগুড়ি (Siliguri) পর্যন্ত চলাচল করত। শিয়ালদা থেকে ব্যারাকপুর, রানাঘাট জংশন, বাংলাদেশের দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা, পোড়াদহ, দামুকদিয়া ঘাটের কাছে ব্রডগেজ লাইনে দার্জিলিং মেলের যাত্রা শেষ হত। যাত্রীদের সেসময় সেতুহীন পদ্মা পাড় করে সাঁড়াঘাটে মিটারগেজ লাইনে দার্জিলিং মেলে উঠতে হত। সেখান থেকে নাটোর, সান্তাহার, হিলি, পার্বতীপুর, নীলফামারি, হলদিবাড়ি, জলপাইগুড়ি হয়ে ট্রেন শিলিগুড়ি পৌঁছোত। পরে হার্ডিঞ্জ সেতু হওয়ায় সাঁড়াঘাট-শিলিগুড়ি লাইন ব্রডগেজ হয়। ফলে, নতুন ঈশ্বরদিহী স্টেশন দিয়ে চলাচল করে। আরও পরে গেদে, বাংলাদেশে চিলাহাটি স্টেশন তৈরি হয়। তখন দার্জিলিং মেল গেদে দিয়ে দর্শনা, পার্বতীপুর হয়ে পূর্ববঙ্গের কিছু স্টেশন দিয়ে চিলাহাটি হয়ে ট্রেনটি হলদিবাড়ি, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে চলাচল শুরু করে। কিন্তু ১৯৬৫ সাল নাগাদ ভারত-পাক যুদ্ধের জন্য দার্জিলিং মেল বন্ধ হয়। পরে দার্জিলিং মেলের দুটি সংযোগকারী কোচকে হলদিবাড়ি থেকে চালিয়ে এনজেপিতে (NJP) মূল ট্রেনের সঙ্গে জুড়ে শিয়ালদা পাঠানো হত।
সাংসদ জানান, এখন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে মিতালি এক্সপ্রেস, মালগাড়ি চলছে। রেল ও বিদেশমন্ত্রকে দার্জিলিং মেলকে ‘গোল্ডেন রুট’-এ চালানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। গুরুত্ব পাবে দার্জিলিং মেলের হেরিটেজ রুট (Heritage Route)। আকর্ষিত হবেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা (Tourists)। এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত করতে বহু দূর অবধি যেতে হবে। যদি দল তাঁকে ফের আসন্ন লোকসভা (Lok Sabha) ভোটে প্রার্থী করে তাহলে জয়ন্তবাবু এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত করেই ছাড়বেন বলে দাবি করেন। সাংসদ আরও জানান, এ ব্যাপারে ভারতের বিদেশমন্ত্রীকেও জানিয়েছি। রেল ও বিদেশমন্ত্রকের সমন্বয়ে দার্জিলিং মেল ভবিষ্যতে তার পুরানো রুটে চলবে এই আশা করছি।