মালদা: মাত্র ২৫ মিনিটের অপারেশন। তারপর নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য সাক্ষী হিসাবে তৈরি হওয়া। আরও কিছু সময় পর পরিবারের সঙ্গে বোনকে খোঁজার নাটক। নাবালিকার(Minor) গলাকাটা দেহ উদ্ধারের তদন্তে নেমে ধৃত যুবকের বিরুদ্ধে এমনই সব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। অভিযুক্ত দাদার এহেন নৃশংসতা এবং ভাবলেশহীন মনোভাব দেখে অবাক দুঁদে পুলিশকর্তারাও। তবে শুধুমাত্র যে নাবালিকার বাবার কাছে অপমানিত হয়েই এমন ঘটনা, ধৃতের দাবি করা এমন তত্ত্ব মানতে নারাজ তদন্তকারী পুলিশ(Police) আধিকারিকরা। এদিকে, দোষীর শাস্তির দাবিতে এখনও ক্ষোভে ফুঁসছে মালদা শহরের সাত থেকে সত্তর।
গত ২৯ জানুয়ারি মালদা(Malda Murder) শহরের এক নাবালিকার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে এক যুবককে আটক করে জেরা শুরু করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। ওই যুবকের দেওয়া সমস্ত তথ্যের প্রমাণ মেলার পর নাবালিকার জ্যেঠতুতো দাদার উপর সন্দেহ হয় পুলিশের। তারপরেই সেই দাদাকে আটক করে জেরা শুরু করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, জেরায় প্রথমে পুলিশকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে সে। অভিযুক্তের মোবাইলের লোকেশনের ডিটেইলস আসতেই পুলিশের সন্দেহ আরও জোরালো হয়। পুলিশি জেরায় অভিযুক্তের দেওয়া বয়ান অনুযায়ী দুই বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার কথা মিললেও মধ্যের কিছু সময়ের তথ্য তার ফোনের লোকেশনের সঙ্গে মিলছিল না। দফায় দফায় ১০-১২ ঘণ্টার জেরার পর একসময় সমস্ত ঘটনা স্বীকার করে সেই দাদা। এরপর ধৃতকে সঙ্গে নিয়েই ৩১ জানুয়ারি রাতে এক জায়গা থেকে নাবালিকার ধড়, অন্য জায়গা থেকে মুণ্ডু উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত জ্যেঠতুতো দাদা প্রায় ২৫ মিনিট আমবাজার সংলগ্ন এলাকায় ছিল। ওই সময়ের মধ্যে সে নাবালিকা বোনকে খুন করে শরীর ও মাথা আলাদা আলাদা জায়গায় ফেলে দেয়। এরপর দুই বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সাক্ষী তৈরি করে সে। তেমনটাই অনুমান করছে পুলিশ। প্রাথমিক জেরায় পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র মহানন্দা নদীর ধারে ফেলে দেয় সে। মোবাইলের লোকেশনের সঙ্গে সেই তথ্যেরও নাকি মিল পাওয়া গিয়েছে। আপাতত ধৃতকে পুলিশি হেপাজতে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার, খুনের কারণ জানা ও ঘটনার পুনর্নিমাণের প্রস্তুতি চালাচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা।