দুর্গাপুরঃ তৃণমূল প্রার্থীর সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। এই হাতাহাতির মাঝেই কোনওক্রমে এলাকার এক মন্দিরে গিয়ে আশ্রয় নিলেন তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ। ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যান কীর্তি। রবিবার সকালে এমনই ঘটনা ঘটল দুর্গাপুর পুরনিগমের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আমরাই গ্রামে। এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। যদিও তৃণমূল প্রার্থীর দাবি, হাতাহাতি বা গোষ্ঠী কোন্দল নয়, তৃণমূলকর্মীদের এটা প্রেমের বহিঃপ্রকাশ। এদিনের গোষ্ঠী কোন্দলকে কটাক্ষ করতে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। আর যাই হোক না কেন, এদিন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গোষ্ঠী কোন্দল স্বচক্ষে দেখে নিলেন প্রার্থী কীর্তি আজাদ।
রবিবার সকালে রবিবাসরীয় প্রচারে দুর্গাপুর পুরনিগমের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আমরাই গ্রামে গিয়েছিলেন দুর্গাপুর বর্ধমান কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কীর্তি আজাদ। সেখানে প্রচারের প্রথমেই পরস্পররের বিরুদ্ধে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল নেতা শেখ শাহাবুদ্দিন ও তৃণমূল কংগ্রেসের ২ নম্বর ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়। সেখানে বিবাদ মিটে যাওয়ার পর এলাকার একটি শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন কীর্তি আজাদ। এরপর কীর্তি আজাদকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল নেতা শাহাবুদ্দিন ও তার দলবল আমরাই গ্রামের রাস্তায় মিছিল শুরু করেন। সেই সময় ৩০০ মিটার দূরে দলবল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন অপর এক তৃণমূল নেতা আমিনুর রহমান। কীর্তি আজাদকে নিয়ে শাহাবুদ্দিন ও তার দলবল সেখানে যাওয়া মাত্রই শুরু হয়ে যায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ। কীর্তি আজাদের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তৃনমুল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর কর্মী ও সমর্থকেরা। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। আর তা থামাতে না পেরে ক্লান্ত প্রার্থী কীর্তি আজাদ ঢুকে পড়েন শঙ্করানন্দ আনন্দ আশ্রমের মন্দিরে। সেখানে শাসক দলের প্রার্থী সিঁড়িতে বসে পড়েন। তাঁকে দেখে ক্লান্ত ও হতবাক দেখাচ্ছিলো। প্রায় ৩০ মিনিট পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেখান থেকে আবার প্রচার শুরু করেন তিনি।
শাহাবুদ্দিন বলেন, “প্রার্থীর সমর্থনে আমরা এলাকায় মিছিল করছিলাম। প্রার্থীকে দেখতে পেয়ে আমাদের লোকেরা মালা পরাতে এগিয়ে গেলে প্রভাতবাবুর লোকজন বাধা দেন, মারধরও করে।” প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য প্রতিক্রিয়া জানা যাযনি। ঘটনার জেরে কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।
লোকসভা নির্বাচনের আগে এমন ঘটনায় বেশ কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সরাসরি কিছু বলতে চাননি। তবে জানা গেছে, কেন এমন ঘটনা ঘটলো তা খতিয়ে দেখছে জেলা নেতৃত্ব। এদিনের তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
পরে সাংবাদিকদের সামনে এই ঘটনাকে দলের গোষ্ঠী কোন্দল বলে মানতে চাননি তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ। যদিও তৃণমূল প্রার্থীর দাবি, “এখানে গোষ্ঠী কোন্দলের কোনও বিষয় নেই। কর্মীরা সকলে চায় মালা পরাতে, কেউ চায় কথা বলতে, অতি উৎসাহ, প্রেম থেকেই কর্মীরা এটা ঘটিয়ে ফেলেছেন। এর মধ্যে অন্য মানে খোঁজা ঠিক নয়। এটা ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ!” বিজেপির কটাক্ষ নিয়ে তার বক্তব্য, ঐ দলটা আগে নিজেরটা দেখুক। আর যাই হোক না কেন, এদিন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গোষ্ঠী কোন্দল স্বচক্ষে দেখে নিলেন প্রার্থী কীর্তি আজাদ।