কালচিনি: মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকেলে বাগানের ৮সি সেকশনে অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে চা গাছে জীবাণুনাশক ছেটাচ্ছিলেন ভারতী নায়েক মুন্ডা নামে বছর তেইশের এক শ্রমিক। সেই সময় চা গাছের ঝোপ থেকে বের হয়ে আসে একটি চিতাবাঘ (Leopard)। হামলা চালায় ওই মহিলার ওপর। প্রথমে হকচকিয়ে যান ভারতী। চিতাবাঘের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে যান। তাঁকে লক্ষ্য করে থাবা তোলে সেই চিতাবাঘ। সেই থাবা এসে পড়লে কী হত বলা যায় না। তবে তা হতে দেননি ভারতী। কোনওমতে থাবা আটকে দেন।
সেই সময় বাগান পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বাগানের ম্যানেজার সন্তোষ সাবর। তিনি ও বাগানের শ্রমিকরা মহিলাকে বাঁচাতে ছুটে যেতেই চিতাবাঘটি সেখান থেকে পালিয়ে যায়। জখম ওই শ্রমিককে তড়িঘড়ি লতাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান ম্যানেজার ও বাগানের শ্রমিকরা।
ম্যানেজার খবর দেন বন দপ্তরে। খবর পেয়ে বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের পানা রেঞ্জের বনকর্মীরা হাসপাতালে আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবশ্য মহিলাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর ডান হাতে চিতাবাঘের নখের আঁচড় পড়েছে। দুটো সেলাই পড়েছে জখম মহিলার হাতে। এর আগে সোমবার রাতে কালচিনির আটিয়াবাড়ি চা বাগানের এক তরুণ চিতাবাঘের হামলায় জখম হয়েছিলেন। পরপর চিতাবাঘের হামলা চলতে থাকায় চিনচুলা চা বাগান সহ অন্য বাগানগুলোতেও শ্রমিক মহলে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভারতী জানিয়েছেন, ‘বাগানে একাধিক চিতাবাঘ রয়েছে বলে আমাদের ধারণা।’
চিনচুলা বাগানে খাঁচা পাতার জন্য আগেই আবেদন করা হয়েছিল বন দপ্তরের কাছে। বন দপ্তরের তরফে একটি খাঁচাও দেওয়া হয়েছে। সেটি ৮সি সেকশনে পাতা রয়েছে। প্রতিদিন খাঁচায় টোপ দিয়ে চিতাবাঘটিকে আটক করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু কোনও চিতাবাঘ খাঁচাবন্দি হয়নি। পানার রেঞ্জ অফিসার অর্ণব চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘মানুষ সচেতন হলে চিতাবাঘের হামলা রোধ করা অনেকটাই সম্ভব হবে। যে শ্রমিক জখম হয়েছেন তাঁর চিকিৎসার খরচ সরকারি নিয়মে বন দপ্তর বহন করবে।’
বন দপ্তরের পরামর্শমতো বুধবার সকালে কাজ শুরুর আগে চা বাগানের সেকশনে বাজি পটকা ফাটানো হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন চা শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে শ্রমিকদের সচেতন করা হচ্ছে। বাগানের ম্যানেজার জানিয়েছেন, ‘আমরা বন দপ্তরের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রাখছি। খাঁচাটিকে বিভিন্ন সেকশনে স্থান বদল করা হচ্ছে।’
বন দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, চিতাবাঘ নিজের আইসাইট লেভেল বা দৃষ্টিসীমার উচ্চতায় থাকা মানুষের ওপর হামলা চালায়। শিশুদের উচ্চতা কম থাকায় তাদের উপর অনেকসময় হামলা চালায়। কেউ নীচু হয়ে বসে থাকলে তার উপরেও হামলার আশঙ্কা থাকে।
চিনচুলা চা বাগান ছাড়াও প্রতিটি চা বাগান কর্তৃপক্ষকে এবিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। এছাড়াও শ্রমিকরা যাতে সংঘবদ্ধ হয়ে কোনও সেকশনে কাজ করেন সেই বিষয়েও সচেতন করা হচ্ছে।
আর এদিন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার পর ভারতী কী বলছেন? মেনে নিচ্ছেন যে ভয় পেয়েছেন। তবে সেই ভয়কে মাথায় চড়তে দেবেন না। বলছেন, ‘কাজে যাব। তবে সুস্থ্ হয়ে কাজে ফিরলেও বেশ কিছুদিন মনে আতঙ্ক থেকেই যাবে।’
শিলিগুড়ি: পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টির জেরে তিস্তার জলস্তর হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বিপত্তি ঘটলো রংপোতে। নদীতে আটকে…
পতিরাম: এ যেন ফিল্মি কায়দায় চুরি। পরিবারকে গ্যাস স্প্রে করে অচৈতন্য করে বাড়ির সর্বস্ব চুরি…
কালিয়াচক: কালিয়াচকের রাজনগর মডেল গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের পর আরও এক জার বোমা উদ্ধার (Bomb recovered)…
বিশ্বজিৎ সরকার, করণদিঘি: মাইনোরিটি স্কলারশিপের (Minority Scholarship Scam) কোটি কোটি টাকা তছরুপের দায়ে অভিযুক্ত মহম্মদ…
রাহুল দেব, রায়গঞ্জ: আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও খুনের চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার(Arrest) করেনি পুলিশ। এলাকায় বহালতবিয়তে…
দুর্গাপুর: বাংলাদেশে পাচারের পথে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের(STF) জালে ধরা পড়লো বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ…
This website uses cookies.