নাগরাকাটাঃ ঘোষণা করেছিলেন আগেই। বুধবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন অমরনাথ ঝা। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের প্রাক্তন মেন্টার অমরনাথের হাতে পদ্মপতাকা তুলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। মালবাজারে বিজেপির জনসভার মঞ্চে চা শ্রমিক নেতার দলত্যাগে তৃণমূলের অভ্যন্তরে এখন জোর মন্থন শুরু হয়েছে। অমরনাথের সঙ্গে এদিন বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নাগরাকাটা ব্লক কমিটির আহ্বায়ক গৌরব দে।
যদিও শাসক দলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ একাধিক উদাহরন তুলে ধরে বলেন, এমন অনেক নেতাই দল ছেড়েছে। তাতে তৃণমূলের কোন ক্ষতি হয় নি। এক্ষেত্রেও কিছু হবে না। জলজ্যান্ত উদাহরন তো ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনের আগে আমাদের প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায়ই রয়েছেন। তিনি তখন বিজেপিতে গেলেও ওই কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়ই বড় মার্জিনে জেতেন। এবারও মানুষের আশীর্বাদে তৃণমূলের জয় রোখার সাধ্য কারোর নেই।
নাগরাকাটা ব্লক কংগ্রসের প্রাক্তন সভাপতি অমরনাথের দলত্যাগের বিষয়টি নিয়ে দিনভর চর্চা হয় তৃণমূলের অন্দরে। অমরনাথের সঙ্গে আর কেউ গেলেন কিনা বা যোগাযোগ রাখছেন কিনা, সেই বিষয়েও নজর রাখছেন দলীয় নেতৃত্ব।
কে এই অমরনাথ ঝা? একটা সময়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে একা কুম্ভ হয়ে লড়াই চালিয়ে ডুয়ার্সের কংগ্রেসের অবস্থাকে চাঙ্গা করেছেন এই অমরনাথ। ভরা বাম আমলে তাঁর নেতৃত্বেই ২০০৩ এর পঞ্চায়েত ভোটে নাগরাকাটায় কংগ্রেস ৯ টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৮ এর পঞ্চায়েতে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১। ২০১১-র বিধানসভা ভোটে নাগরাকাটা আসন থেকে কংগ্রেস প্রার্থীর জয় কিংবা ২০১৩-র ভোটে সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড দখলেরও নেপথ্য কারিগর ছিলেন। সেবার নিজেও কংগ্রেসের টিকিটে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ব্লক সভাপতি হন। ২০১৮ সাল থেকে মাস খানেক আগে পর্যন্তও জেলা পরিষদের মেন্টর ছিলেন। ২০১৯ এ তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় শাসক দলের ব্লক সভাপতির পদ থেকে। তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকেও সরানো হয়েছিল আগেই।
এদিন অমরনাথ বলেন, দল যে আমাকে ব্রাত্য করে দিয়েছে বুঝতে বাকি ছিল না। আমি রাজনীতির লোক। বসে থাকতে পারব না। বিজেপিতে থেকেই মোদিজীর সৈনিক হয়ে পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে চাই। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা হয়েছে। এদিন থেকেই দলের হয়ে নির্বাচনি প্রচারে নেমে পড়েছি। অমরনাথের সঙ্গী হিসেবেই পরিচিত ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রেম ছেত্রী বলেন, উনি ভুল সিদ্ধান্ত নিলেন। এককথায় হতাশজনক। তবে দলের ওপর একচুলও প্রভাব পড়বে না।