অরুণ ঝা, ইসলামপুর: রায়গঞ্জ (Raiganj) লোকসভা আসনে দলের নীচুতলার কর্মীদের ক্ষোভ সামাল দিতে তৎপর তৃণমূল (TMC)। লিড না পেলে পদ কাড়ার হুমকির প্রেক্ষিতে দলে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে, বিষয়টি বুমেরাং হতে পারে ধরে নিয়েই আগামী ২৮ মার্চ তৃণমূলের জেলা কমিটি ও দলের জেলা নির্বাচনি কমিটি বৈঠকে বসছে। তার আগে, ২৭ মার্চ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani)।
নেতৃত্বের হুমকি ইস্যুতে দলের নানা স্তরে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বলে গুঞ্জন তুঙ্গে। এ বিষয়ে প্রার্থীকে বহুবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। ফলে, তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, আগামী ২৮ মার্চ দলীয় বৈঠকের আগে কৃষ্ণ কল্যাণী সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না। এ ব্যাপারে প্রার্থীর ভোট ম্যানেজার তথা করণদিঘির বিধায়ক গৌতম পাল বলেন, ‘ওটা শাসানি নয়, দলীয় অনুশাসনের কথা। ২৮ মার্চ জেলা নির্বাচনি কমিটির বৈঠকে লড়াইয়ের রোড ম্যাপ তৈরি হবে।’ কৃষ্ণের ছায়াসঙ্গী মন্ত্রী গোলাম রব্বানি অবশ্য সংগঠনের জোরেই সমস্ত এলাকা থেকেই দল লিড নেবে বলে দাবি করেন। দলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল জানান, দলে অনুশাসন আছে। সবাই মিলেমিশেই কাজ করবে। ২৮ মার্চ মিটিংয়ে সবকিছু আলোচনা হবে।
প্রার্থী সহ তৃণমূল ইতিমধ্যে লোকসভার প্রায় সব ব্লকে প্রচার শুরু করেছে। কংগ্রেস, বিজেপি তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। তাদের হাতিয়ার তৃণমূলের অন্তঃকলহ। ঘাসফুলের জেলা সভাপতির গোষ্ঠীর সঙ্গে মন্ত্রী ও বিধায়ক অনুগামীদের ঠান্ডাযুদ্ধ নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা রীতিমতো ধন্দে। কানাইয়ার ডানা ছাঁটতে ইতিমধ্যে প্রার্থীর অনুগামীরা জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে নিজেদের শিবির মজবুতে মরিয়া। পদ বাঁচাতে তাঁরাও ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়’ নীতিতে নিজ নিজ লয়্যালটি প্রকাশে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে খবর। দলেই জল্পনা, কানাইয়াকে কোণঠাসা করে ইসলামপুর বিধানসভা থেকে বড় লিড নেওয়ার ছক কষছে কৃষ্ণ শিবির।
কানাইয়াপন্থীদের দাবি, তাঁদের অবস্থা শাঁখের করাতের মতো। ভোটের (Lok Sabha Election 2024) পর বড় নেতাদের ভবিষ্যৎ অজানা। তবে পান থেকে চুন খসলেই তাঁদের উপর কোপ পড়বে। ইতিমধ্যে উপরতলার নেতারা ঠারেঠোরে তা বোঝাচ্ছেন। তাই দলে অবিশ্বাসের বাতাবরণ, বিভ্রান্ত কর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে বিধায়ক বলেন, ‘২৭ মার্চ কৃষ্ণ কল্যাণী বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। ২৮ মার্চ রায়গঞ্জে জেলার সাংগঠনিক বৈঠক। লিড না দিলে পদ থাকবে না বলে যাঁরা শাসানি দিয়েছেন তাঁরা ভুল করছেন। কারণ, পঞ্চায়েত বা পুরভোটে যাঁরা লিড পান লোকসভায় সেই বুথ বা এলাকায় কেন লিড থাকবে না? লিড না পেলে দলীয় অনুশাসন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা যেতেই পারে। এতে বিতর্ক অর্থহীন।’