দিলীপকুমার তালুকদার, বুনিয়াদপুর: সাংসদ হলে কেন্দ্রের আখেরে কোনও লাভ হয় না যদি না প্রার্থীর দল সরকার গঠন করতে পারে। সেক্ষেত্রে একজন সাংসদ ফি বছর পাঁচ কোটি টাকা পাবেন। পাঁচ বছরে তাঁর তহবিলে জমা হবে ২৫ কোটি টাকা। এই টাকায় প্রার্থীর কেন্দ্র বা তাঁর এলাকার সার্বিক উন্নয়ন কোনওভাবেই সম্ভব নয়। মন্ত্রী হলে প্রার্থীর কেন্দ্র যেমন লাভবান হয় পাশাপাশি কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকারও উন্নয়ন হয়। তাই ভোটের মুখে বালুরঘাটে নতুন দাবি উঠেছে – ‘চাই না সাংসদ, উন্নয়নের স্বার্থে প্রয়োজন মন্ত্রীর।’
তৃণমূলের অনেকে খোলাখুলি বলছেন, দল বা প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের প্রতি তাঁদের আনুগত্যে এতটুকু চিড় ধরেনি। কিন্তু উনি সাংসদ হলে এলাকার কোনও লাভ হবে না। কারণ, তৃণমূল ৪২টি আসনে জয় পেলেও তারা সরকার গড়তে পারবে না। তাছাড়া শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছে, দল কারও সঙ্গে জোটেও যাবে না। সুতরাং, বিপ্লব মিত্রের সাংসদ হওয়া আর না হওয়ার মধ্যে ফারাক সামান্যই। তার চেয়ে মন্ত্রী হলে বালুরঘাট অনেক বেশি লাভবান হবে।
বৃহস্পতিবার দেউরিয়ায় এক তেলেভাজার দোকানে বসে কয়েকজনের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। চিন্ময় চৌধুরী তৃণমূলের কট্টর সমর্থক। প্রার্থী হিসেবে বিপ্লব মিত্রের নাম ঘোষণায় খুশি। তিনি বলেন, ‘আমরা তৃণমূল করি। বিপ্লব মিত্রের সমর্থক। কিন্তু আমরা চাই তিনি মন্ত্রী থাকুন। মন্ত্রী থাকলে আমাদের এলাকায় উন্নতি হবে। এমপি হলে সেই ক্ষমতা থাকবে না। বছরে মাত্র ৫ কোটি টাকা পাবেন। পাঁচ বছরে মোট ২৫ কোটি টাকা দিয়ে সারা জেলায় কতটুকু কাজ তিনি করতে পারবেন? তাই আমরা ঠিক করেছি ভোটটা পদ্মেই দেব।’
তার আরও সংযোজন, ‘টিএমসি রাজ্যের ৪২টা আসন পেলেও সরকার গঠন করতে পারবে না।’ উপস্থিত সকলেই সমস্বরে তাঁর কথাকে সমর্থন করলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিঙ্গাদহের এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘বিপ্লব মিত্র যে কাজের মানুষ, তা নিয়ে কারও মনে কোনও সন্দেহ নেই। এলাকার জন্য অনেক কাজ করেছেন। আমার মতো অনেকেই চান, বিপ্লব মিত্র মন্ত্রীই থাকুন। সাংসদ হওয়ার দরকার নেই। তাই আমরা অনেকেই এবার তাঁকে ভোট দেব না।’
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক ডাকাবুকো সিপিএম নেতা বলেন, ‘আমরা আমাদের আরএসপি প্রার্থী জয়দেব সিদ্ধান্তকে ভোট দেব না। ভোট দেব বিজেপিকে। এখানে বিজেপি প্রচুর ভোটে এগিয়ে থাকবে। লিখে রাখুন সুকান্ত মজুমদার প্রচুর ভোটে জিতবেন।’