মানিকচকঃ বিজেপি পরিচালিত মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান ও পূর্ত সঞ্চালকের কাজিয়া তুঙ্গে। সেই কাজিয়া গড়াল থানায়। পূর্ত সঞ্চালক সোমেন মণ্ডলের বিরুদ্ধে মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন পঞ্চায়েত প্রধান মৌসুমী মণ্ডল। তাঁর দাবি, ভুয়ো বিলে অবৈধভাবে স্বাক্ষর করাতে তাঁকে চাপ দিচ্ছেন পূর্ত সঞ্চালক। বিলে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করায় তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছেন তিনি। যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন সোমেনবাবু। তাঁর দাবি, প্রধান কাটমানি ছাড়া কোনও কাজ করেন না। ঠিকাদার তো বটেই, গ্রামের সাধারণ মানুষও তাঁর কাটমানির শিকার। তিনি প্রতিবাদ করায় তাঁর নামে মানিকচক থানায় মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রধান।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে বিজেপি। মৌসুমী মণ্ডল প্রধান নির্বাচিত হন। বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য সোমেন মণ্ডল পূর্ত সঞ্চালক হিসাবে নিযুক্ত হন। কিছুদিন ধরেই প্রধান ও পূর্ত সঞ্চালকের কাজিয়া নিয়ে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ সোমেনবাবুর সঙ্গে প্রধানের স্বামী সঞ্জীব মণ্ডলের ফোনে চরম কাজিয়া হয়। সোমেনবাবু নাকি সেই সময় প্রধান ও তাঁর স্বামীকে মারধরের হুমকি দেন। সেই রাতেই প্রধান মৌসুমীদেবী ও তাঁর স্বামী মানিকচক থানার দ্বারস্থ হন। সোমেনবাবুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।
মৌসুমীদেবীর দাবি, ‘একটি ভুয়ো বিলে অবৈধভাবে স্বাক্ষর করতে আমাকে চাপ দেয় সোমেন মণ্ডল।। আমি সেই বিলে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করি। তাই সোমেনবাবু আমার স্বামীকে ফোন করে মারধর ও প্রাণে মারার হুমকি দেয়। আমরা ভীত ও সন্ত্রস্ত। মানিকচক থানায় সোমেনবাবুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’
এদিকে সোমেনবাবুর বক্তব্য, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রধান। আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রধান ১৬ লক্ষ টাকার গোপন টেন্ডার করেছেন। কাটমানি ছাড়া তিনি কোনও কাজ করেন না। কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরও ঠিকাদারদের অবৈধভাবে বাড়তি কমিশনের জন্য চাপ দেন। জন্ম কিংবা মৃত্যুর শংসাপত্র, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট নিতে ৫০০ বা হাজার টাকা দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। আমি এর প্রতিবাদ করি। এনিয়ে ফোনে প্রধানের স্বামীর সঙ্গে আমার বচসা হয়। তাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করেছেন প্রধান ও তাঁর স্বামী।’