উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চলে মদন মিত্রের বাড়িতে। পুরসভায় নিয়োগ মামলায় তাঁকে কী প্রশ্ন করেছে সিবিআই? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মদন জানান, তাঁর ক’টা বউ জানতে চেয়েছে সিবিআই। এমনকি, সিবিআইকে পালটা প্রশ্নও করেছেন তৃণমূলের কামারহাটির বিধায়ক। জানতে চেয়েছেন, তাঁর অভিনীত সিনেমা সিবিআই আধিকারিকরা দেখেছেন কি না।
মদন বরাবরই রসিক মানুষ হিসেবে পরিচিত। এদিনও তাঁর মুখে চিন্তার লেশমাত্র লক্ষ্য করা যায়নি। এদিন টানা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেলে বেশ খোশমেজাজেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রাক্তন মন্ত্রী। দুপুরে তদন্তকারীরা বেরিয়ে যেতেই স্বভাবসিদ্ধ রসিকতায় ফেরেন মদন। বলেন, ‘আমি পাঠান, পাঠান, পাঠান। টাইগার মরা নেহি।’ মদনের দাবি, ঠিক কোন পুরসভায় নিয়োগ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হচ্ছে, সেটাই ঠিকভাবে বলেননি সিবিআই আধিকারিকরা। তিনি জিজ্ঞাসা করায় এক আধিকারিক নাকি বলেছেন, ‘ওই যে মিউনিসিপ্যাল নিয়ে সব হচ্ছে না? ওই জন্য এসেছি।’ মদনের দাবি, এরপর তাঁকে সরকারিভাবে অন রেকর্ড সিবিআই প্রশ্ন করে, তাঁর কত জন স্ত্রী। তৃণমূল বিধায়কের কথায়, ‘আমাকে বলল, আপনার একটা না দুটো বৌ? আমি বললাম, সেটা তো খোঁজ করলেই পাওয়া যাবে। তবে এটা জানি, আমি হাঁটলেই ৫০ জন গোপিনী হাঁটবে। কিন্তু আমার নামে কোনও ৪৯৮ ধারায় মামলা নেই। আমার সব ভার্চুয়াল।’ মদন জানান, তিনিও সিবিআইকে প্রশ্ন করেছেন যে, তাঁর অভিনীত ‘ও লাভলি’ সিনেমা তাঁরা দেখেছেন কি না।
নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে মদনের বক্তব্য, ‘আমাদের অফিসে ভিক্ষা করতে এলে এক কেজি চাল, একটু ডাল, মিষ্টি দিই। বাচ্চা এলে তাকে চকোলেট দিই। তাই টেট হোক, গ্রুপ ডি হোক, আমাদের অফিসে যদি কেউ চাকরির খোঁজে আসে, তাঁকে তো ডান্ডা মেরে তাড়াতে পারি না। ফলে অনেকেই এসেছেন। হাজার হাজার আবেদন করেছেন মানে হাজার হাজার চাকরি হয়েছে, এমন তো নয়।’ তিনি জানান, পুরসভার নিয়োগে তাঁর কোনও হাত নেই। কারণ, যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, তখন তিনি জেলে ছিলেন।
অয়ন শীলের সূত্র ধরে পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে তদন্ত করছে ইডি-সিবিআই, সেই অয়নের সঙ্গে তাঁর সত্যিই কি যোগসূত্র রয়েছে? এ নিয়ে মদনের পালটা প্রশ্ন, অয়ন শীলের সঙ্গে যদি বলা হয় মতি শীলের যোগ ছিল, তাহলে কি সেটাও মেনে নিতে হবে? তাঁর সঙ্গে অয়ন শীলের কোনও যোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মদন। তাঁর কথায়, ‘আমি মদন মিত্র বুকের পাটা ফুলিয়ে বলছি, ছেলেমেয়েদের চাকরির জন্য জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত, শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করব। যদি কেউ এক ইঞ্চিও দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে গলায় দড়ি দিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দেব!’