মালবাজার: পুরোনো গাড়িকে যত্নে রেখেছেন অনেকেই। সেই সব গাড়ি পাহাড় ডুয়ার্সে সিনেমার লোকেশনে ভাড়াতেও যাচ্ছে। চাহিদা বাড়ছে ওয়েডিং ফটোগ্রাফিতেও। এখনও অনেকেই অযান্ত্রিকের মতো আগলে রেখেছেন সেই সব গাড়ি গুলোকে। কারও কাছে রয়েছে জার্মানির ডেমলার ক্রেশলার কোম্পানির সাত বছর পুরোনো মার্সেডিজ। কারও কাছে আবার আছে ১৯৪৬ এর অস্টিন টেন। আবার কারও বাড়িতে এখনও শোভা পাচ্ছে ১৯৬৭-র সুইসাইড দরজার ফিয়াট ১১০০। ১৯৮৬ এর প্রথম ছোট গাড়িতে বিপ্লব এনে দেওয়া মারুতি উদ্যোগের ৮০০ গাড়িও যত্নে রেখে দিয়েছেন কেউ। কারও কাছে আবার রয়েছে বাঙালির ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করা দুধ সাদা অ্যাম্বাসেডর।
শহরের রাজাপাড়ার বাসিন্দা বাবুয়া চক্রবর্তী শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে নিজস্ব ছোট চা বাগান ও গোলমরিচ বাগান নিজের গাড়ি করেই দেখভাল করতেন। ১৯৯২ মডেলের একটি ফিয়াট তার দীর্ঘদিনের বাহন। সেই গাড়িই সম্প্রতি একটি বাংলা ওটিটি শুটিংয়ে ভাড়া করা হয়। প্রায় দিন কুড়ি শুটিংয়ে ব্যবহার করার পর পুনরায় ব্যক্তিগত কাজে গাড়ি ব্যবহার শুরু করেন বাবুয়া বাবু।
চালসার দত্ত পরিবারে রয়েছে জোড়া অ্যাম্বাসেডর। তারই একটি হিন্দি ওটিটি শুটিংয়ে ব্যবহার হয়, পরবর্তীতে লাইন প্রডিউসার সংস্থা মোটা টাকায় গাড়িটি কিনেও নেয়। লাইন প্রডিউসার সংস্থাটির কর্ণধার বাবলু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পুরোনো সময়কে দেখাতে হলে পুরোনো গাড়ি ভীষণ প্রয়োজন পাহাড় ডুয়ার্সে কলকাতা থেকে গাড়ি নিয়ে এসে সুট করা অনেক ব্যয়বহুল তাই এই এলাকায় যারা পুরোনো গাড়ি যত্নে রাখছেন আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে চলেছি।’
মালবাজার-১ নম্বর ওয়ার্ডের রায় পরিবারে জোড়া মার্সেডিজ গাড়ি অঞ্জন দত্ত এবং অরিন্দম শীলের পর্যায়ক্রমে দুই ব্যোমকেশেই ব্যবহার হয়েছে। গাড়িচালক কর্মা লামা বলেন, আমরা সযত্নেই গাড়িগুলিকে আগলে রেখেছি। লুকসানে রয়েছে গুপ্তা পরিবারের ১৯৪৬ সালের অস্টিন টেন গাড়ি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ উত্তর কালে এই গাড়ি গোটা পৃথিবীজুড়ে বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। একটি বিরাট সময়কে ধরে রাখে এই গাড়ি। এইসব গাড়ির অধিকাংশই মেরামত হয় মালবাজার পুরসভা লাগোয়া ভরত দাসের গ্যারেজে। ৬৫ পেরানো ভরত বাবু বলেন, আজকালকার মেকানিকরা পুরোনো যন্ত্র বাতিল করে নতুন লাগাতে পারলেই বেঁচে যায়। কিন্তু পুরোনো কে নিয়ে চলার যে মজা তা একবার যে পেয়েছে সেই জানে।