মালদাঃ মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা। হাত থেকে স্যালাইনের পাইপ খোলা হয়েছে। এমনই এক তরুণ রোগীকে পিঠে তুলে ট্রমা কেয়ার ইউনিটের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। কাছেপিঠে নেই কোনও স্ট্রেচার। কোনও গ্রামীণ হাসপাতালে নয়, শুক্রবার এই ছবি ধরা পড়েছে খোদ মালদা মেডিকেলে। শুধু এদিনই নয়, স্ট্রেচার না মেলায় মাঝেমধ্যেই বাধ্য হয়ে কখনও রোগীদের কোলে করে, আবার কখন পিঠে করে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে হচ্ছে বাড়ির লোকজনকে।
শুধুই কি তাই! জরুরি বিভাগ থেকে ১০০ মিটার দূরে থাকা ট্রমা কেয়ার ইউনিটে যেতে অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা মোটা টাকা দাবি করছে বলে অভিযোগ। এনিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে রোগীদের পরিজনদের মধ্যে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মেডিকেল সুপার।
শুক্রবার দুপুরে দুর্ঘটনার কবলে পড়া শিশির মণ্ডলকে হবিবপুর থেকে মালদা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছিল। স্ট্রেচার না পেয়ে শিশিরবাবুকে পিঠে করে ট্রমা কেয়ার ইউনিটে নিয়ে যেতে দেখা যায়। শিশিরবাবুর এক আত্মীয় জানালেন, ‘রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য জরুরি বিভাগ থেকে স্ট্রেচার দেওয়া হচ্ছে না। মেডিকেলের কর্মীরা বলছেন, এই স্ট্রেচার শুধুমাত্র জরুরি বিভাগের জন্য। অনেকেই জরুরি বিভাগ থেকে স্ট্রেচার নিয়ে গিয়ে ফিরিয়ে আনেন না। এদিকে জরুরি বিভাগ থেকে ১০০ মিটার দূরে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স ২০০-৩০০ টাকা দাবি করছে। বাধ্য হয়ে পিঠে চাপিয়ে রোগীকে ভর্তি করতে নিয়ে যাচ্ছি।’
মালদা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে রোগীদের ভরসা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এখানে জরুরি বিভাগের সামনে সমস্ত রোগীকে নামিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স ফিরে যায়। জরুরি বিভাগে দেখানোর পর ট্রমা কেয়ার ইউনিটে রোগীকে নিয়ে যেতে হয়। অভিযোগ, জরুরি বিভাগ থেকে রোগীকে ওই বিভাগে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্ট্রেচার পাওয়া যায় না। পর্যাপ্ত স্ট্রেচার থাকলেও কর্মীরা ট্রমা কেয়ার ইউনিটে সেই স্ট্রেচার নিয়ে যেতে দিচ্ছেন না। মেডিকেলের কর্মীরা রোগীর আত্মীয়দের বলছেন, রোগীর পরিবারের লোকজন স্ট্রেচার নিয়ে যাওয়ার পর আর ফিরিয়ে আনেন না। তাতে জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের সমস্যায় পড়তে হয়। একই সমস্যা দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন বিভাগ থেকে আউটডোরে পরীক্ষা করাতে যাওয়ার সময়ও।
এনিয়ে মেডিকেল সুপার প্রসেনজিৎ বরের সাফাই, ‘এমন ঘটনা হওয়ার কথা নয়। ইমারজেন্সিতে পর্যাপ্ত স্ট্রেচার রয়েছে। সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই এমন অভিযোগ পেলাম। সহকারী সুপারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছি।’