মালদা: মণিপুরের ছায়া মালদায়! মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাক্ষী থাকল বামনগোলা। দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠল এলাকারই কয়েকজন মহিলার বিরুদ্ধে। চুরির অভিযোগ রয়েছে ওই দুই মহিলার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র জানিয়েছেন, ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পাকুয়াহাটে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করছেন স্থানীয় কয়েকজন মহিলা। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাই থাকুক না কেন, কিন্তু এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি জানান, পাকুয়াহাটে যেখানে হাট বসে তার ২০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। এত বড় হাটে একজন পুলিশ আধিকারিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে কেন থাকবেন না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, যাঁরা এমনটা করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ, পাশাপাশি ওই দুই মহিলার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ রয়েছে তাও পুলিশকে খতিয়ে দেখা উচিৎ।
ঘটনায় সরব হয়েছে বিজেপিও। স্থানীয় বিজেপি নেতা অজয় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, মণিপুরের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বিগ্ন। অথচ মালদায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের সামনে মহিলাদের বিবস্ত্র করে মারধর করা হচ্ছে। পুলিশ নিজের কাজ ভুলে গিয়েছে। থানায়ও ওই মহিলাদের বিবস্ত্র অবস্থায়ই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, ঘটনায় পুলিশ কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। বিজেপি নেতা জানান, পুলিশ অভিযোগ দায়ের না করলে আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে দ্বারস্থ হবেন তাঁরা, যাঁরা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইছে।
এদিকে ঘটনায় একের পর এক টুইট করে খোঁচা পদ্ম শিবিরের। পালটা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য টুইটে জানান, গত ১৯ জুলাই মালদার পাকুয়াহাটে দুই মহিলাকে অত্যাচার করা হয়। বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করা হয়। এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, সেই প্রশ্নও করেন অমিত মালব্য। টুইট করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের সঙ্গে আরেকটি ভয়ংকর ঘটনা ঘটল। অন্যান্য জঘন্য ঘটনার মতো, দিদি নীরব এবং কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। কেন ‘ইন্ডিয়া’ এটার নিন্দা করছে না?। হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, মণিপুর হোক বা পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতি, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি মেয়েই সম্মানের দাবিদার। তবে তৃণমূলের দাবি, ঘটনা সত্যি হলে পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয় বলে মত শশী পাঁজার।