কোচবিহার: কোচবিহার লোকসভা আসনে (Loksabha Election 2024) তৃণমূল, বিজেপি, বামফ্রন্ট সহ অন্য দলের প্রার্থীরা ইতিমধ্যে তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা করেছেন। আর সেই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের নামে মামলার ছড়াছড়ি। খুব একটা পিছিয়ে নেই তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়াও। কোচবিহার আসন জয়ের দুই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, মামলার নিরিখেও একে-অন্যকে টক্কর দিচ্ছেন। তবে এক্ষেত্রে বামফ্রন্টের নীতীশচন্দ্র রায় একেবারে ব্যতিক্রমী। ক্লিন ইমেজ তাঁর। হলফনামা অনুযায়ী নীতীশের বিরুদ্ধে একটিও মামলা নেই।
সিতাইয়ের বিধায়ক তথা কোচবিহারের তৃণমূল প্রার্থী জগদীশের নামে দিনহাটা মহকুমা আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন। ২০১১ সালে সিতাই থানায় সেই অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই মামলায় জগদীশের বিরুদ্ধে বেআইনি সমাবেশ করা, ভীতি প্রদর্শন, হিংসাত্মক কার্যকলাপ সহ অন্যান্য অভিযোগ রয়েছে।
মামলার কথা তো আর অস্বীকার করা যায় না। তবে এক্ষেত্রে তৃণমূলের ‘ঢাল’ বিজেপির প্রার্থী। তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, ‘বিজেপির বিপরীতে আমাদের প্রার্থী অত্যন্ত স্বচ্ছ ভাবমূর্তির। তাই জেলার মানুষ এবারে তাঁকেই নির্বাচিত করবেন।’
এত গেল জগদীশের কথা। এখানকার বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ যেন মামলার পাহাড়ে বসে রয়েছেন। তাঁর নামে বর্তমানে ১৪টি মামলা বিচারাধীন। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে এযাবৎ তাঁর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় দুটি, দিনহাটা থানায় নয়টি, মাথাভাঙ্গা থানায় একটি ও আলিপুরদুয়ার থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়। তিনি ডাকাতির প্রস্তুতি, প্রতারণা, ভীতি প্রদর্শন, হিংসাত্মক কার্যকলাপ, খুন, খুনের চেষ্টা, অস্ত্র আইনের মতো মামলায় অভিযুক্ত। এসবের পাশাপাশি চুরি, চোরাই সামগ্রী গ্রহণ, বাড়ি ভাঙচুর, বিস্ফোরক পদার্থ ব্যবহার, সরকারি কর্মীকে বাধাদান সহ অন্যান্য অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
বিজেপি নেতৃত্ব শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পালটা তোপ দেগেছে। দলের জেলা সম্পাদক শুভাশিস চৌধুরীর বক্তব্য, ‘বিরোধী দল করায় তৃণমূল প্রশাসন সর্বদাই বিজেপি নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করায়। আর সেজন্যই আমাদের প্রার্থীর নামে এত মামলা।’ যদিও নিশীথ ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। তার আগে তৃণমূলে থাকাকালীনই তাঁর বিরুদ্ধে বেশিরভাগ মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
এই তথ্যকে হাতিয়ার করে সিপিএম নেতৃত্ব, তৃণমূল ও বিজেপি উভয় দলকে তোপ দেগেছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়ের বক্তব্য, ‘অপরাধের দিক থেকে ওই দুই দলের কোনও তফাত নেই। এর বিপরীতে বামফ্রন্ট সর্বদাই স্বচ্ছতাকে গুরুত্ব দেয়। তাই আমাদের প্রার্থীর নামে কোথাও কোনও অভিযোগ নেই।’