হরিশ্চন্দ্রপুর: লোকসভার ফলাফল অনুযায়ী দেশে মোদি রাজ্যে দিদি। বাংলায় কার্যত সবুজ ঝড়। কিন্তু সেই ঝড়ের মাঝেও মালদায় ফুটল না ঘাসফুল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মালদায় একাধিক জনসভা করার পরেও লোকসভায় তৃণমূল থেকে মুখ ফেরাল মালদাবাসী। একুশের বিধানসভার ফলাফল অনুযায়ী যে মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে ২ লক্ষেরও বেশি ভোটে এগিয়েছিল তৃণমূল। সেই কেন্দ্রে হার হল প্রায় ৭৭ হাজার ভোটে। মন্ত্রী থেকে জেলা সভাপতি কেউই পারলেন না নিজের গড়ে লিড দিতে। একুশে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা থেকে জিতেছিলেন প্রায় ৯৭ হাজার ভোটে। সেই বড় ব্যবধানে জয়ের উপহার হিসেবে তাকে মন্ত্রিত্বও দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু সেই বিধানসভায় প্রায় ৪০০০ ভোটে এগিয়ে থাকলেন কংগ্রেস প্রার্থী মুস্তাক আলম। আর তারপরেই কার্যত তৃণমূলের অন্দরেই অন্তর্ঘাত নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে।
খারাপ ফলাফল হওয়ার পর আরেক জেলা পরিষদ সদস্যা তথা হরিশ্চন্দ্রপুর-১ (বি) ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মর্জিনা খাতুন বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন। তিনি জানান, দলের অনেকেই সঠিকভাবে ভোট করায় নি। বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। সেই সব তথ্য তার কাছে রয়েছে। সঠিক সময়ে তিনি জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বকে জানাবেন।
বিজেপির জেলা কমিটির সম্পাদক রুপেশ আগরওয়ালের দাবি, খগেন মুর্মু পাঁচ বছর সাংসদ থেকে কাজ করে ছিলেন। তাই পুনরায় তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তৃণমূলের ভেতরে কে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সেটা ওদের দল জানবে।
কংগ্রেস নেতা আবদুস শোভানের দাবি, তৃণমূল এখানে দুর্নীতির রাজনীতি করেছে। মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জমি দখল করেছে। তার বিরুদ্ধে ভোট হয়েছে। ২০২১ সালের ফলাফল বিচার করলে কংগ্রেসের লক্ষাধিক ভোট বেড়েছে।
প্রসঙ্গত উত্তর মালদা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন বিজেপির খগেন মুর্মু। আর কংগ্রেসের প্রার্থী মোস্তাক আলম তৃতীয় স্থানে থাকলেও তৃণমূলের দখলে থাকা বিধানসভাগুলি থেকে লিড নিয়ে তৃণমূলের মালদা উত্তর জয়ের স্বপ্নকে চুরমার করেছেন। কিন্তু সেটাই সব নয়। তৃণমূলেকে ঘর শত্রু বিভীষণের ভূমিকা পালন করেছে সেটাই এখন শাসকদলে লাখ টাকার প্রশ্ন।