জামুড়িয়া: অনেকে ভেবেছিলেন উল্কাপাত হয়েছে। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়ার ইকরা শিল্পতালুকে। পরে শেষ পর্যন্ত জানা গেল যে, কোনও উল্কাপাতের ঘটনা ঘটেনি। লাগোয়া এলাকায় থাকা একটি বেসরকারি রোলিং মিল কারখানায় আরপিএম মোটরের হুইল খুলে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে। ওই হুইল রোলিং মিলের চাল ফুটো করে তিনটি আলাদা আলাদা জায়গায় ছিটকে পড়ে। আর তাতেই ঘটে যায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এই ঘটনায় ইকরা গ্রামের বাউড়িপাড়ার অমর বাদ্যকর নামের এক ব্যক্তির বাড়ির উঠোনে আছড়ে পড়ে সেই যন্ত্রাংশ। এই ঘটনায় তার ১৮ বছরের মেয়ে ঝুলন বাদ্যকর গুরুতরভাবে আহত হয়। তার শরীরের বেশ কিছু অংশে আঘাত লাগে। পরে দ্রুত তাকে স্থানীয় আকলপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, অনিল বাদ্যকর নামে এক ব্যক্তির বাড়ির ছাদে প্রথমে ওই যন্ত্রাংশটি পড়ে। পরে তা ছিটকে পড়ে অমর বাদ্যকরের বাড়ির উঠোন। যদিও প্রথমদিকে এই ঘটনাটি উল্কাপাতের ঘটনা বলে চারিদিকে গুজব রটে যায়। পরে অবশ্য যন্ত্রাংশ ছিটকে পড়ার খবর সামনে আসে। ঘটনার খবর পেয়ে জামুড়িয়া থানার পুলিশ এলাকায় আসে। পুলিশের বিশালবাহিনী ঘিরে রেখেছে এলাকাটিকে। পরে সেখানে আসে রাজ্য পুলিশের বম্ব স্কোয়াডর দল। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদেরকে কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়, তা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের তরফে আলোচনা করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ইকরা এলাকাতেই নয়, ইকরার রাজা রামডাঙ্গা ও জাদুডাঙ্গা এলাকাতেও এই কারখানার যন্ত্রাংশ ছিটকে পড়ে, সেখানেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কিছু মানুষজনের বাড়ি ঘর। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সরজমিনে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে ওই কারখানার সামনেই রাস্তা অবরোধ করে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘ঠিক কি করে এই ঘটনা ঘটেছে, তা জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তবে কারখানার তরফে এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।‘