গাজোল: বাড়তি কিছু উপার্জনের আশায় পাড়ি দিয়েছিলেন দুবাইয়ে। কিন্তু বাড়তি উপার্জন তো দূর অস্ত, উপরন্তু সেখানে গিয়ে দেখা দিয়েছিল প্রাণ সংশয়। জুটছিল না ঠিকমতো খাবার। ১৫ জনের জন্য বরাদ্দ ছিল সারাদিনে দুই কেজি চাল অথবা দেড় কেজি আটা। এছাড়া মিলত পাঁচটি পাকিস্তানি রুটি। এই দিয়েই কোনওরকমে দিন গুজরান হত। অবশেষে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, গাজোল থানার আইসি চন্দ্রশেখর ঘোষাল এবং বিডিও সুদীপ্ত বিশ্বাসের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঘরে ফিরলেন দুবাইয়ে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিক পূর্ণেন্দু বৈরাগী। বাড়ি ফিরে এসেই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তার বার্তা – ‘কেউ যেন বাড়তি উপার্জনের আশায় দেশ ছেড়ে ভিন দেশে পাড়ি না দেন।’
এদিন চাকনগরে নিজের বাড়ি ফিরে এসে পূর্ণেন্দুবাবু জানান, স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে বেশি উপার্জনের আশায় চলতি মাসের ১ তারিখ দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। গত ৫ ডিসেম্বর মুম্বই থেকে প্লেনে করে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন। সঙ্গে ছিলেন এই রাজ্যের আরও বেশকিছু শ্রমিক। কিন্তু দুবাইয়ে পৌঁছে চরম আতান্তরে পড়েন তাঁরা। যে কাজ এবং বেতন দেওয়ার কথা বলে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা দেওয়া হয়নি। উলটে লেবারের কাজ দেওয়া হয়েছিল। সেই কাজ করতে চাননি তাঁরা। এরপর তাঁদের কাছ থেকে টাকা, পাসপোর্ট, ভিসা সমস্ত কিছু কেড়ে নিয়ে প্রথমে শারজা এবং পরে আবুধাবিতে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। একটি ঘরে ১৫ জনকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। একটি পাকিস্তানি রুটি তিনজন মিলে ভাগ করে খেতেন বলে জানিয়েছেন তিনি। লুকিয়ে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নিজেদের দুরবস্থার কথা জানিয়েছিলেন তাঁরা। এরপরই বন্দিদের পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে। সুকান্তবাবু যোগাযোগ করেন বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে। বিদেশমন্ত্রকের তরফে দুবাইয়ে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এদিন সকালে বাড়ি ফিরে আসেন পূর্ণেন্দুবাবু। তাঁর বাড়ি ফিরে আসায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি পরিবারের সদস্যরা।