জলপাইগুড়ি: সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ‘হুব্বা’। সেখানে বাবার গালে সপাটে চড় কষিয়ে ঘর ছেড়েছিল হুগলির অঘোষিত ‘ডন’ শ্যামল দাস ওরফে হুব্বা। বুধবার তারই ভিন্ন সংস্করণ দেখা গেল জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) কোতোয়ালি থানায়(Police Station)। ক্লাস নাইনের পড়ুয়া বছর সাড়ে তেরোর এক ছাত্রী জন্মদাতা বাবা-মার(Parents) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে দ্বারস্থ হল থানার। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম, থানা সবাই ঘটনার উৎস খুঁজতে নাকাল হল। দিন শেষে মেয়েটিকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বাড়ি পাঠায় পুলিশ। অনেকেই কিশোরীটিকে কাউন্সেলিংয়ের পরামর্শ দেন।
এদিন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মেয়েটি ও তার বান্ধবীকে নিয়ে থানায় আসে। কিশোরীর(Minor) অভিযোগ, মা-বাবা রোজ তার উপর নির্যাতন চালায়। ছোটবেলায় কারও কাছ থেকে তাকে কিনেছিল। এখন সেই টাকার জন্য তাকে দেহব্যবসায় নামাতে চায়। তাঁদের নজর এড়িয়ে সে পুলিশের কাছে এসেছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটিকে মেয়েটি বোঝায়, বাড়ি ফিরলে তার উপর ফের অত্যাচার হবে। তাকে রাতেই কোথাও গুম করে দেওয়া হবে। তাই সে বাড়ি নয়, বান্ধবীর বাড়িতে থাকতে চায়। এসব শুনে সংস্থাটি মেয়ে দুটিকে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ মেয়েটির কাছে তার প্রকৃত বাবার-মায়ের ঠিকানা চায়। সে জানায়, বর্তমানে সেই মা মৃত। বাবা অন্যত্র রয়েছেন। পুলিশ বর্তমান বাবা-মায়ের ঠিকানা, ফোন নম্বর নিয়ে তাঁদের ডেকে পাঠায়। কয়েকজন প্রতিবেশী মহিলাকে নিয়ে মেয়েটির মা থানায় আসতেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়। মেয়েটির বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও তাদের কথায় অসংগতি মেলে। মেয়ের জন্মের পরিচয়পত্র সহ অন্যান্য নথিপত্র দেখান মা। তখনই প্রমাণ হয় মেয়েটি মিথ্যা বলছে। পুলিশ ফের মেয়েটিকে জেরা করতেই সে জানায়, থানায় আসা সঙ্গী তার খুব ভালো বান্ধবী। ও বান্ধবীর সঙ্গে ওদের বাড়িতেই থাকতে চায়। বান্ধবীর পরিবার জানায়, গত ছ’সাত দিন ধরে তাদের বাড়িতে মেয়েটির যাতায়াত বেড়েছিল। দুজন দীর্ঘ সময় একত্রে থাকত। গত ২ ফেব্রুয়ারি মেয়েটি এক মহিলা সহ থানায় একই অভিযোগ করেছিল। তখন পুলিশ তাদের বাড়ি ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পরে, মেয়েটি মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তার মা জানান, কিছুদিন ধরে ওর আচরণে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তাঁদের নিজের মা-বাবা বলে মানতে অস্বীকার করছে। বান্ধবীর সঙ্গে থাকার জন্য সাজিয়ে মিথ্যে কথা বলেছে।
চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরামের তরফে মধুমিতা দাস জানান, মেয়েটির কথায় অসংগতি ছিল। ওকে থানায় নিয়ে গিয়েছিলাম। প্রথমে মিথ্যা বললেও পরে সব স্বীকার করে। শিশুরা কিছু পেতে মিথ্যা বলে। ওর কাউন্সেলিং দরকার। পুলিশ অবশ্য মেয়ে দুটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে এনিয়ে কিছু বলতে চায়নি।