সানি সরকার, শিলিগুড়ি: বৃষ্টির বিরতির মাঝেই বর্ষার প্রবেশ। রেমালের প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরেই ভিজেছে রাজ্য। এরই মধ্যে কেরলের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতে বৃহস্পতিবার প্রবেশ করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। এই পথ ধরে আগামী শনিবারের মধ্যে উত্তরবঙ্গে বর্ষা (Monsoon update) শুরু হয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া দপ্তর।
এবছর স্বাভাবিকের চেয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে সামান্য কম বৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে উত্তরবঙ্গের (North bengal weather) ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা নেই। ফলে উত্তরের চা এবং কৃষি বলয় উপকৃত হতে চলেছে। ভুটান পাহাড়ে অতি বৃষ্টি এবং তিস্তা গর্ভে পলির স্তর থাকায় আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি নয়ে ভয় রয়েছে। আশঙ্কায় পাহাড়ের তিস্তাপাড়ও।
আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতে যেহেতু বর্ষা প্রবেশ করেছে, ফলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর জন্য উত্তরবঙ্গকেও বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এখানে বর্ষা প্রবেশ করতে চলেছে।’ আগাম বর্ষা এবং ভুটান পাহাড়ের বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে পাহাড় থেকে সমতল ৬৮টি রেইনগেজে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান সেচ দপ্তরের উত্তর-পূর্ব বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক। তিনি বলেন, ‘১ জুন কন্ট্রোলরুম খোলা হলেও এখন থেকেই নজরদারি চালানো হচ্ছে। ফিল্ডে প্রত্যেকদিনই দল যাচ্ছে। রিপোর্ট মোতাবেক পদক্ষেপ করা হচ্ছে এবং হবে।’
ক’দিন আগেই তীব্র গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা ছিল রাজ্যে। কিন্তু গত রবিবার ঘূর্ণিঝড় রেমাল আছড়ে পড়ার পরই বদলেছে আবহাওয়া। বাংলাদেশ সংলগ্ন লাগোয়া হওয়ায় কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে গত দুই-তিনদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার এই তিন জেলার জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি, বৃষ্টির থেকে বাদ যাচ্ছে না সমতল শিলিগুড়ি সহ দার্জিলিং জেলার বড় অংশ।
জলপাইগুড়ির মধ্যে দিয়ে সাধারণত উত্তরবঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রবেশ ঘটে ১০ জুন। অর্থাৎ এবছর প্রায় ১০ দিন এগিয়ে আসছে বর্ষা। সাধারণত, ১ জুন কেরলে বর্ষা প্রবেশ করে। কিন্তু এবার দু’দিন এগিয়ে ৩০ জুন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বর্ষা প্রবেশ করেছে। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে এতটা আগাম কেন? রেমালের প্রভাবের কথা তুলে ধরছেন আবহবিদরা। তাঁদের বক্তব্য, রেমাল উত্তরবঙ্গেও দখিনা বাতাস টেনে এনেছে। যার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ জলীয় বাষ্পের জোগান ঘটায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রবেশের পথ প্রশস্ত হয়েছে।