গাজোল: বাড়িতে লক্ষীপুজো হবে। সেই কারণে সাতসকালে মেয়ের বাড়ি থেকে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন কাজলী দেবী এবং তাঁর মেয়ে রীতা। কিন্তু বাড়ি যাওয়া হল না তাঁদের। মাঝ রাস্তায় এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল মা এবং মেয়ের। শনিবার সকাল ছ’টা নাগাদ মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সালাইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের বারডাঙা এলাকায়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় মা এবং মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই মারা যান দুইজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় গাজোল থানার পুলিশ। ঘাতক ট্রাক সহ চালককে আটক করে পুলিশ। দুর্ঘটনাগ্রস্থ টোটোটিকেও উদ্ধার করা হয়। জানা গিয়েছে, মৃতরা হলেন কাজলী সরকার (৪৫), অপরজন তাঁর মেয়ে রীতা সরকার (১৪)।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ফরাক্কা থেকে সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ২১ মাইল হয়ে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা ধরে আহিলে যাচ্ছিল। সেখানে সুশান্ত বালা নামক এক ব্যবসায়ীর গোডাউনে সিমেন্টগুলো নামানো হত। উলটোদিকে হাটনগরে মেয়ের বাড়ি থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার জালালপুরে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন কাজলী দেবীরা। একটি টোটোতে করে আসছিলেন তাঁরা। টোটোতে বাঁধা ছিল পাটকাঠি। বারডাঙ্গা মোড়ের কাছে ট্রাকের হুকে আটকে যায় পাটকাঠি বাঁধা দড়ি। এর ফলে ট্রাকের সঙ্গে আটকে যায় টোটো। টোটো উলটে ট্রাকের চাকার নীচে চলে যায় মা এবং মেয়ে। দুজনেরই পায়ের উপর দিয়ে চলে যায় সিমেন্ট ভর্তি ট্রাক। টোটোতে চালক সহ ছিলেন পাঁচজন। তবে সব থেকে বেশি আহত হন মা এবং মেয়ে। অপর একজন সামান্য আহত হন। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারাই আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে। মা এবং মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেল কলেজে। কিন্তু রাস্তাতেই মারা যান তাঁরা দুজন। পুলিশ ঘাতক ট্রাক সহ চালককে আটক করে নিয়ে আসা হয় থানায়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত টোটোটিকেও আটক করেছে পুলিশ। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ।