রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়িঃ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে (North Bengal Medical College) সুপারস্পেশালিটি ব্লক চালু করা নিয়ে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ট (Raju Bista) এবং শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের (Goutam Deb) মধ্যে তর্জা (MP-Mayor conflict) শুরু হয়েছে। সুপারস্পেশালিটি চিকিৎসা পরিষেবা চালু না হওয়ার দায় রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়েছেন রাজু। তাঁর কথায়, গৌতম দেবের মতো প্রবীণ রাজনীতিবিদ এই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান থাকার পরেও এই ঘটনায় হতাশ তিনি।
গৌতমের পালটা দাবি, ‘সাংসদ কিছু না জেনেই এসব উলটোপালটা বলছেন। কেন্দ্রীয় সরকার আধুনিক যন্ত্রপাতি এখনও সরবরাহ করতে পারেনি। ক্যাথ ল্যাব আসছে, আসবে অনেকদিন ধরেই শুনছি, আজও আসেনি।’ শুধু মেডিকেলই নয়, গত কয়েক বছরে সাংসদ এই অঞ্চলের উন্নয়নে কিছু করেননি বলে গৌতমের দাবি। সাংসদও পিছু হটার পাত্র নন। তিনি বলেন, ‘আমার উদ্যোগেই এলাকায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার কাজ এসেছে।’
২০১৫ সালে উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনায় (Pradhan Mantri Health Protection Yojana) সুপারস্পেশালিটি ব্লক তৈরির জন্য ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সঠিক সময়ে এর নির্মাণকাজ শুরু হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বরাতপ্রাপ্ত এজেন্সি অর্ধেক কাজও শেষ করতে পারেনি। তাই ওই এজেন্সিকে কালো তালিকাভুক্ত করে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মাঝে প্রায় এক বছর অর্ধসমাপ্ত ভবনটি পড়ে থাকার পর নতুন এজেন্সি নিয়োগ করা হয়। সেই এজেন্সি কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এখানে ছয়টি সুপারস্পেশালিটি বহির্বিভাগের পরিষেবা চালু হয়েছে। কিন্তু অন্তর্বিভাগ এখনও চালু হয়নি। কবে চালু হবে তাও অনিশ্চিত।
রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, এখনও সুপারস্পেশালিটি ব্লকের জন্য ক্যাথ ল্যাব, হার্ট লাং মেশিন, সিটি স্ক্যান মেশিন স্বাস্থ্যমন্ত্রক দেয়নি। ক্যাথল্যাব না এলে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, অ্যাঞ্জিওগ্রাফি হবে না। হার্ট লাং মেশিন না এলে কার্ডিওথোরাসিক সার্জারিও করা সম্ভব নয়।
সোমবার দার্জিলিংয়ের সাংসদ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার মানুষকে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিতেই সুপারস্পেশালিটি ব্লকের অনুমোদন দিয়েছিল। রাজ্য সরকারের ভুলে এই ব্লকে চিকিৎসা পরিষেবা চালু হয়নি। এর জবাব রাজ্যকেই দিতে হবে। এই রাজ্যের সমস্ত ক্ষেত্রে দুর্নীতি ছাড়া কিছু হচ্ছে না।’
গৌতমের পালটা বক্তব্য, ‘কেন্দ্রের গাফিলতিতেই সুপারস্পেশালিটি ব্লক চালু করা যাচ্ছে না। আমরা নিয়মিত এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। সাংসদ একজন কম বয়সি ভদ্রলোক। কিছু না জেনেই উলটোপালটা কথা বলছেন। পাঁচ বছরে কোনও প্রকল্প আনতে পারেননি।’