সানি সরকার, শিলিগুড়ি: উন্নয়নের গেড়োয় দুর্ভোগ। বিশ্বমানের স্টেশন গড়ে তোলার কাজ চলছে নিউ জলপাইগুড়ি জংশন বা এনজেপিতে(NJP)। সেইজন্য সরানো হচ্ছে ট্যাক্সি সহ বিভিন্ন গাড়ির স্ট্যান্ড। ফলে দীর্ঘ সময়ের জন্য চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে যাত্রীদের।
স্টেশন চত্বরের সামনে থাকা গাড়ির স্ট্যান্ডটি কিছুটা দূরের ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (আইআরএলডিএ) মাঠে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। যার জন্য এলাকাটিতে কিছুটা হলেও পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলছে। গাড়ির পাশাপাশি সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে টোটোস্ট্যান্ড। আর তা নিয়েই দুর্ভোগের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ যাত্রার পর প্ল্যাটফর্মে নেমে লটবহর নিয়ে এতটা পথ হেঁটে যাওয়া কি সম্ভব, প্রশ্ন উঠছে। যদিও সমস্যাটিকে সাময়িক হিসেবে দেখছেন রেলকর্তারা।
একটু বৃষ্টি হলেই এনজেপির প্রবেশপথে হাঁটুজল দাঁড়িয়ে যায়। নিকাশিনালার ব্যবস্থা না থাকায় জলকাদা পায়ে মেখেই গাড়ি বা টোটোর জন্য অনেকটা পথ চলতে হয় যাত্রীদের। মূলত যাঁরা এনজেপিতে নেমে শহর শিলিগুড়ি(Siliguri) বা অন্য গন্তব্যের জন্য গাড়ি বা টোটোয় সওয়ারি হতে চান, তাঁদের। কেননা, ট্রেন ধরার জন্য এনজেপি স্টেশনে গাড়ি বা টোটো নিয়ে যাওয়ার অনুমতি মিললেও, ট্রেন থেকে নামার পর ছাড় মেলে না এই ক্ষেত্রে। কোনও ধরনের গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখতে দেয় না আরপিএফ। এই নিয়ে বারবার যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তাতে সাড়া মেলেনি। পরিস্থিতি যখন এমন, তখন পার্কিংয়ের জায়গা সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আরও অনেকটা। তাও আবার বর্ষার সময়।
আইআরএলডিএ’র মাঠ থেকে এনজেপি স্টেশনে যাওয়ার জন্য দুটি রাস্তা তৈরি করতে ছয়টি হোটেল ভেঙে দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। তার মধ্যে গাড়ির স্ট্যান্ড সরিয়ে দেওয়া অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। এনজেপি স্টেশন চত্বর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব পাল বলছেন, ‘হোটেল ভাঙার সময় ড্রেন তৈরির পাশাপাশি রাস্তা মেরামতের কথা বলা হয়েছিল। কিছুই হয়নি। একেই ঘুরপথ, তার মধ্যে জলকাদা, বৃষ্টির সময় চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে যাত্রীদের। আমরাও ব্যবসায়িক দিক দিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছি।’ বড় হোটেলগুলির থেকে কিছুটা জায়গা নিয়ে ভাঙা পড়া হোটেলগুলিকে জায়গা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
আইআরএলডিএ’র মাঠে সমস্ত গাড়ির জায়গা হবে না বলে দাবি করেছে জাতীয়তাবাদী ট্যাক্সি অ্যান্ড প্রাইভেট কার ড্রাইভার ইউনিয়নের (এনজেপি ইউনিট) সভাপতি উদয় সাহা। তাঁর বক্তব্য, ‘যে জায়গা দেওয়া হচ্ছে, তাতে সমস্ত গাড়ি দাঁড়াতে পারবে না। জায়গা না পেয়ে কিছু গাড়ি দাঁড় করাতে হবে রাস্তায়, যা নিয়ে সমস্যা দেখা দেবে।’ স্ট্যান্ড সরিয়ে দেওয়ায় যাত্রীরা চরম সমস্যায় পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন তিনিও।
জানা গিয়েছে, বর্তমানে যেখানে বিভিন্ন গাড়ির স্ট্যান্ড রয়েছে, সেখানে নতুন ভবন ছাড়াও অত্যাধুনিক পার্কিং স্লট তৈরি করা হবে। যার জন্য সমস্ত এলাকাটি ঘিরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর জন্যই নতুন স্ট্যান্ড চালু হওয়ার পর আরও পথ ঘুরতে হবে যাত্রীদের। এক রেল আধিকারিকের বক্তব্য, ‘যাত্রীদের সুবিধা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে নজর রেখেই এনজেপিকে নতুন রূপে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আশা করছি এই সাময়িক সমস্যা মেনে নেবেন যাত্রীরা।’