নাগরাকাটা: দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই প্রথম জমির অধিকার পেল অসুর জনজাতি। ডুয়ার্সে (Dooars) তাঁদের অন্যতম ডেরা ক্যারন চা বাগানের প্রায় একশো অসুর সম্প্রদায়ের হাতে মঙ্গলবার বাস্তু জমির পাট্টা তুলে দেয় ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর। সব মিলিয়ে ওই বাগানের ৬০৬টি পরিবারের হাতে ৫ ডেসিমেল জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়। অসুর ছাড়াও বাকিদের মধ্যে রয়েছে সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা জনজাতির আদিবাসী সম্প্রদায়রা।
এবিষয়ে নাগরাকাটা (Nagrakata) পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, ‘এককথায় ঐতিহাসিক একটি দিন। পাট্টা প্রাপকরা বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্যও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পাবেন।’
ভুটান সীমান্তের প্রত্যন্ত ক্যারনে অসুরদের বাস মূলত কারি লাইনে। এর বাইরে মাতু ও গেট লাইনেও তাঁরা থাকেন। সব মিলিয়ে সেখানে একশোর সামান্য কিছু পরিবার নিয়ে অসুরদের বাস। বেশিরভাগই চা শ্রমিকের কাজ করেন। যাদের বাগানে কাজ নেই তাঁদের ভরসা দিনমজুরি। এদিন ক্যারন চা বাগানের ফ্যাক্টরির সামনের মাঠে অনুষ্ঠিত শিবিরে পাট্টা দেওয়া হয়। পাট্টার নথিপত্র পেয়ে উচ্ছ্বসিত সুধা অসুর নামে এক মহিলা বলেন, ‘কোনওদিনও ভাবিনি জমির অধিকার পাবো। এর ফলে নিজেদের আত্মমর্যাদা আরও বাড়ল। মুখ্যমন্ত্রীকে (Cm Mamata Banerjee) ধন্যবাদ।’
ক্যারনের পঞ্চায়েত সদস্য ললিতা অসুর বলেন, ‘আমাদের সম্প্রদায় নানা দিক থেকে পিছিয়ে পড়া। পাট্টার মাধ্যমে আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নও হবে বলে মনে করি।’ অসুরদের পাশাপাশি পাট্টা প্রাপক বাগানের অন্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের শ্রমিকরাও এদিন নিজেদের সন্তষ্টির কথা প্রকাশ করেন। শিবির শেষ হওয়ার পর এদিনের ধন্যবাদ র্যালিতে শামিল হন তৃণমূল (TMC) নাগরাকাটা ব্লক কমিটির সভাপতি কাজি পান্ডে, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ গণেশ ওরাওঁ, লুকসান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনালী বিশ্বাস, উপপ্রধান সুরেশ ওরাওঁ, পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রবীণ সিং ঝা সহ অন্যরা।