শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: বিয়ে বা প্রেমে প্রত্যাখ্যানজনিত কারণে নানা ধরনের অপরাধমূলক ঘটনার খবর মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। তাই বলে আক্রোশে কোলের শিশুকে অপহরণ (Child Abduction)! এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাই ঘটেছে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার নাগরাকাটায় (Nagrakata)। খবর পেয়েই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার হয়েছে অভিযুক্তও। বর্তমানে তার ঠিকানা জেল হেপাজত। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম বিনোদ হেমব্রম। বাড়ি হিলা চা বাগানে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে আলোড়ন তৈরি হয়েছে গোটা এলাকাতেই। জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে। পাশাপাশি অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে আদালতেও তোলা হয়েছে।’
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, নাগরাকাটার সুলকাপাড়া এলাকার এক গৃহবধূকে সম্প্রতি বিয়ের প্রস্তাব দেয় বিনোদ। সে ওই গৃহবধূর দূরসম্পর্কের আত্মীয়। ওই গৃহবধূর বছর চারেকের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। বিনোদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন গৃহবধূ। এরপরই বিনোদ গত শুক্রবার বিকেলে শিশুটিকে অপহরণ করে এলাকারই একটি পরিত্যক্ত গুদামঘরে রেখে দেয়। সন্তানকে খুঁজে না পেয়ে ওই গৃহবধূ পুলিশের দ্বারস্থ হন। এই কাণ্ড যে বিনোদেরই তা পুলিশকে জানান তিনি। সে রাতেই পুলিশ শিশুটিকে বন্ধ গুদামঘর থেকে উদ্ধার করে। অভিযোগের ভিত্তিতে বিনোদকে গ্রেপ্তার করে শনিবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হলে তাঁর ১৪ দিনের জেল হেপাজত হয়। শিশুটিকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (সিডব্লিউসি)-র কাছে তুলে দেওয়া হয়। সিডব্লিউসি-র চেয়ারপার্সন ডাঃ মান্না মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘শিশুটি দুগ্ধপোষ্য। তাই সমস্ত শর্ত মেনে বাচ্চাটিকে মায়ের কাছেই রাখা হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, আত্মীয়তার সূত্রে ওই বধূর বাড়িতে বিনোদের যাতায়াত ছিল। তবে বিনোদ যে এভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসবে, তা ওই বধূ কল্পনাও করতে পারেননি। প্রস্তাব না মানায় বিনোদের আক্রোশ গিয়ে পড়ে শিশুটির ওপর। শুক্রবার বিকেলেই শিশুটিকে তুলে নিয়ে যায় বিনোদ। ঘটনার খবর জানাজানি হতেই হইচই শুরু হয়। সঠিক সময় নাগরাকাটা থানার আইসি কৌশিক কর্মকারের নেতৃত্বে পুলিশ আসরে নামায় আর কোনও বিপদ হয়নি শিশুটির। এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য উগ্রসেন বড়াইক বলেন, ‘শিশুটিকে গুদাম থেকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাচ্চাটি ভয় পেয়ে গিয়েছিল। পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত সন্তোষজনক।’