রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (NBMCH) চত্বরের আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজের জটিলতা এখনও কাটতে পারল না কর্তৃপক্ষ। পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব খোদ মেডিকেলের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হলেও সমস্যা মেটাতে কোনও রাস্তা বের করতে পারেননি। গৌতমের স্বীকারোক্তি, ‘পুরনিগমের মেকানিজম দিয়ে শহরে পরিষেবা দিতেই হিমসিম খাচ্ছি। এখানকার জন্যে পৃথক ফান্ড এবং পৃথক মেকানিজম প্রয়োজন।’ এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরের আবর্জনা সাফাই প্রক্রিয়া একপ্রকার থমকে রয়েছে।
ওই ক্যাম্পাসে প্রচুর আবাসিক ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মীদের আবাসনও রয়েছে। ঠিকমতো আবর্জনা পরিষ্কার না হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর উত্তর, ‘স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে জেনে নিন।’
রাজ্যে একমাত্র উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালই পঞ্চায়েত এলাকায়। পঞ্চায়েতের যে পরিকাঠামো, তাতে এত বড় ক্যাম্পাসের আবর্জনা পরিষ্কার করা কোনওভাবে সম্ভব নয়। তাই এতদিন শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ) (SJDA) মেডিকেল কলেজের আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ করত। এসজেডিএ সমস্ত আবর্জনা এনে এক জায়গায় ভ্যাটে জমা করত। পরে শিলিগুড়ি পুরনিগমের গাড়ি গিয়ে সেই আবর্জনা সংগ্রহ করত। কিন্তু মাস দুয়েক আগে এসজেডিএ আর সাফাই করতে পারবে না বলে হাত তুলে দেয়।
এরপরে শিলিগুড়ি পুরনিগমকে চিঠি দিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক। পুরনিগম থেকে সপ্তাহে চারদিন গাড়ি এবং লোক পাঠিয়ে ক্যাম্পাস পরিষ্কার করানোর দাবি জানান তিনি। কিন্তু তাঁদের কাছে সেই পরিকাঠামো নেই বলে পালটা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় শিলিগুড়ি পুরনিগমের জঞ্জাল অপসারণ বিভাগ। উপরন্তু যে দু’দিন গাড়ি এসে আবর্জনা সংগ্রহ করে, সেই পরিষেবা বাবদ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বকেয়া চেয়ে পাঠায় পুরনিগম। এরপর থেকে একই পরিস্থিতিতে রয়েছে ক্যাম্পাস। প্রতিদিনই আবর্জনার পরিমাণ বাড়ছে। ক্যাম্পাসে প্রচুর অস্থায়ী খাবারের দোকান রয়েছে। সেখান থেকেও ক্যাম্পাসে আবর্জনা ছড়াচ্ছে। খাবার দেওয়ার সময় ব্যবহৃত প্লেট, কাগজ যেখানে-সেখানে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাই পুরো পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য সচিবের কাছে দরবার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিকেল কলেজ সাফাইয়ের জন্যে স্বাস্থ্য দপ্তর পৃথক টাকা বরাদ্দ করুক, সেই দাবিতে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলে কাজ না হলে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবে কর্তৃপক্ষ।