শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা চলছেই। শিক্ষক, আধিকারিকদের অনুরোধে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের পঠনপাঠনে বাধা দেয়নি আন্দোলনকারী সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি। তবে, সোমবার থেকে ক্যাম্পাস স্বাভাবিক থাকবে কি না তার নিশ্চয়তা দিচ্ছেন না সমিতির নেতারা। আন্দোলন শিথিল করতে চারটি শর্ত দিয়েছে সমিতি। সংগঠনের নেতাদের সাফ কথা, লিখিতভাবে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সেইসব শর্ত মেনে নিলে তবেই ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হবে। নইলে যেভাবে আন্দোলন চলছিল সেভাবেই চলবে। শর্ত না মানলে সোমবার থেকে আন্দোলন আরও জোরদার করার ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের আহ্বায়ক রণজিৎ রায়।
এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে শিক্ষক, আধিকারিক, শিক্ষাকর্মী- প্রত্যেককে নিয়ে একটি আলোচনা সভা ডেকেছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপনকুমার রক্ষিত। যদিও অসুস্থতার কারণে তিনি সভায় উপস্থিত ছিলেন না। ক্যাম্পাস ইনচার্জ প্রণব ঘোষ সভা পরিচালনা করেন। কীভাবে সমস্যা মেটানো যায় তা নিয়ে দীর্ঘ সময় দফায় দফায় আলোচনা হয়। শিক্ষক, আধিকারিক, স্থায়ী কর্মী প্রতিটি সংগঠনের তরফেই আন্দোলনকারীদের দাবিকে সমর্থন জানানো হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে যাতে আন্দোলন না হয় প্রতিটি সংগঠনের নেতারাই সেই অনুরোধ করেন।
ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই দশ শতাংশ বর্ধিত বেতন দিতে হবে- চার শর্তের প্রথমেই সেকথা বলেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা যে জোর করে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে বর্ধিত বেতন দিতে বাধ্য করেননি সেটাও মেনে নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবপক্ষ একজোট হয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নিলেও কেন সেটা অমান্য করা হল তারজন্য ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে হবে। রণজিতের কথায়, ‘আমাদের পেটে লাথি মারার চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের শর্তগুলি মেনে নেওয়ার কথা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার লিখিতভাবে না জানালে সোমবার থেকে কী হবে তা আমরাও জানি না। তবে আন্দোলন যে ফের আরও জোরদার হবে সেকথা বলতে পারি। আমরা পঠনপাঠন বন্ধ করার পক্ষে নই। তবে আমাদের পরিবারের কথাও সবাইকে ভাবতে হবে।’
শুক্রবার সরকারি ছুটি। শনি, রবিবার ক্যাম্পাস বন্ধ। সোমবার থেকে ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হবে বলেই আশাবাদী প্রণব। তাঁর কথা, ‘আন্দোলনকারীদের শর্তের কথা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে জানিয়েছি। তিনি ব্যাখ্যা দেবেন বলে জানিয়েছেন। উপাচার্যকেও বার্তা পাঠানো হয়েছে। আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করা হয়েছে। আশা করছি, তাঁরা ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন।’ ক্যাম্পাস ইনচার্জ বলছেন ঠিকই, তবে লিখিতভাবে চার শর্ত মানা যে বাস্তবে সম্ভব নয় তা ভালোই জানেন আধিকারিকরা। ফলে আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছেই সব মহলে।
বিশ্ববিদ্যালয় আধিকারিক সমিতির সম্পাদক অপূর্ব পালের বক্তব্য, ‘আমরা আন্দোলনকারীদের দাবিকে সমর্থন করি। উপাচার্যের উচিত আর দেরি না করে ক্যাম্পাসে ফিরে আলোচনা শুরু করা।’