অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: থাইরয়েডের সমস্যায় প্রতিদিন ওষুধ খেতে হয় এমন অনেকেই তো রয়েছেন। তবে চিকিৎসকরাই বলেন, থাইরয়েডের এই ওষুধের নাকি বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। নিয়মিত এই ওষুধ খেলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাহলে এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী? উপায় আছে, দাবি করেছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের একদল রিসার্চ স্কলার ও অধ্যাপক। তাঁরা আবিষ্কার করেছেন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে থাইরয়েডের ওষুধ তৈরি করলে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকার সম্ভাবনা কমবে অনেকটাই।
এই গবেষণার গাইড ছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালযে রসায়ন বিভাগের প্রধান তথা অলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ মহেন্দ্রনাথ রায়। জানালেন, ইতিমধ্যেই এই আবিষ্কারের বিষয়টি জার্নাল অফ মলিকিউলার লিকুইডস নামে একটি জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিতও হয়েছে।
এই আবিষ্কার অবশ্য একদিনে হয়নি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালযে পিএইচডি স্কলারদের সঙ্গে ওই বিভাগের অধ্যাপক এবং আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালযে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপকরা প্রায় দেড় বছর ধরে নিরলস গবেষণা চালিযে তবে সাফল্য পেয়েছেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালযে স্কলার ও অধ্যাপকদের দাবি, থাইরয়েডের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেকের দেহেই অ্যালার্জি, রক্তাল্পতা, লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রিসার্চের জটিল তত্ত্ব সহজ ভাষায় বোঝাতে গিয়ে মহেন্দ্রবাবু জানালেন, থাইরয়েডের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় প্রোপাইল থায়োইউরাসিল। তাকে আলফা সাইক্লোডেক্সটিন অণুর মধ্যে প্রবেশ করিয়ে তৈরি করতে হবে জটিল অণু। অতঃপর তা থেকে থাইরয়েডের ওষুধের যে অণু তৈরি হবে, মানবদেহে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে অনেকটাই কম।
আরও সহজ ভাষায় গবেষকদের দাবি, থাইরয়েডের নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধের সঙ্গে আলফা সাইক্লোডেক্সটিন অণু মেশালে নতুন যে অণুটি তৈরি হয়, জলে তা সহজে গুলে যায়। তার ফলে ওষুধের যে অংশ শরীরের জন্য অপ্রয়োজনীয় তা মল, মূত্র ও ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিযে যায়। জমে থাকে না।
ওই গবেষকদলের মধ্যে মহেন্দ্রবাবু বিশেষ করে নাম করেছেন এনবিইউয়ের পিএইচডি স্কলার বিশ্বজিৎ ঘোষের। বিশ্বজিতের বাড়ি কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধায়। বিশ্বজিতের কথায়, থাইরয়েডের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমানোর পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে ক্যানসারের সেল নষ্ট করা যেতে পারে। প্রাথমিকভাবে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেস্টটিউবে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। কেবল বিশ্বজিৎ নয়, এই গবেষণার সঙ্গে নিলয় রায়, দেবাদ্রিতা রায়, মধুসূদন মণ্ডল, সৈকত মণ্ডল, বৈশালী সাহা, বিকাশকুমার ডাকুয়া, অনুপ কুমারের মতো আরও একাধিক গবেষক যুক্ত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি নিয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা? তাঁরা এই দাবি উড়িয়ে দিচ্ছেন না, আবার এখনই উচ্ছ্বসিতও হচ্ছেন না। বলছেন, এই ফর্মুলা নিয়ে আরও পরীক্ষানিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের ফিজিশিয়ান ডাঃ পার্থপ্রতিম দাসের কথায়, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগ যে ফার্মাকোলজি (ওষুধ সংক্রান্ত বিজ্ঞান) নিয়ে গবেষণা করছে, সেটা প্রশংসার যোগ্য। তা থেকে নতুন কোনও আবিষ্কার বা পর্যবেক্ষণ উঠে আসতেই পারে। তবে ব্যবহারের আগে তাকে অনেকগুলি পরীক্ষার ধাপ পেরিযে আসতে হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, থাইরয়েড বাড়লে বা কমলে যে ওষুধগুলো দেওয়া হয় সেসব অনেক পুরোনো। সব ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। কিন্তু সেই সমস্যার সমাধান যতক্ষণ না ফার্মাকোলজির কোনও বইয়ে উঠে আসছে ততক্ষণ তাকে ডাক্তারি স্বীকৃতি দেওয়া মুশকিল।
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ভাইরাল ভিডিও (Viral video) নিয়ে মুখ খুললেন খোদ গঙ্গাধর…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: নতুন ১০০ টাকার নোট (100 currency note) ছাপিয়েছে নেপাল (Nepal)। নতুন…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিজেপিকে কড়া ভাষায় তোপ দাগলেন তৃণমূলের…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ যোগ্যপ্রার্থীকে বঞ্চিত করে কম নম্বরের প্রার্থীকে কোন স্বার্থে চাকরি দেওয়া হল?…
শিলিগুড়ি: মিরিক লেকে (Mirik Lake) ভেসে উঠছে মৃত মাছ (Dead Fish)। গত দু’দিন ধরে চলা…
This website uses cookies.