শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: ঘন কুয়াশায় লোকালয়ে ঘাঁটি গেড়ে থাকা হাতি, চিতা বা বাইসনের মতো বুনোদের হদিস দেবে থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা। ঝোপঝাড় কিংবা অন্য স্থানে লুকিয়ে থাকা বুনোরা ঠিক কতটা দূরে রয়েছে তার আঁচ মিলবে রেঞ্জ ফাইন্ডারের মাধ্যমে। বিশেষ কারণে যদি বুনোদের কাবু করতে ঘুমপাড়ানি গুলির ব্যবহার প্রয়োজন হয় তবে দূর থেকেও ব্যবহার করা যাবে টেলিস্কোপ লাগানো ডেনমার্কে তৈরি অত্যাধুনিক বন্দুক। এর বাইরে ড্রোন বা ট্র্যাপ ক্যামেরা তো রয়েইছে। সম্প্রতি বন দপ্তরের বন্যপ্রাণ শাখার বিন্নাগুড়ি স্কোয়াডের হাতে এসেছে এমনই নানা আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি।
গরুমারা বন্যপ্রাণ ডিভিশন থেকে প্রথম বিন্নাগুড়িতেই থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা বা ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার ওই ধরনের বন্দুক দেওয়া হয়েছে। শীতের কুয়াশার এই মরশুমে বিশেষ করে ক্যামেরা ব্যবহারের সুফলও মিলছে হাতেনাতে। রেঞ্জ অফিসার ধ্রুবজ্যোতি বিশ্বাস বলছেন, ‘একলপ্তে এত সরঞ্জাম পেয়ে দারুণ সুবিধা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরার ব্যবহার করে ঘন কুয়াশায় ১০০ মিটার দূর থেকেও হাতির অস্তিত্ব টের পাওয়া গিয়েছে।’
উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভির বক্তব্য, ‘ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার অত্যাধুনিক বন্দুক বক্সাদুয়ার, জলদাপাড়া সহ গরুমারা বন্যপ্রাণ শাখার বিভিন্ন রেঞ্জকেও দেওয়া হয়েছে। এক বছর পর পারফরমেন্স যাচাই করে দেখা হবে।’
৩-৪ দিন ধরে বিন্নাগুড়ি রেঞ্জ থার্মাল ক্যামেরার ব্যবহার শুরু করেছে। ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার নয়া যে বন্দুকটি এসেছে সেটির রেঞ্জ ১৮০ মিটার। অনেকটা স্নাইপার গানের মতো দেখতে বন্দুকটি ব্যবহার করাও সহজ। প্রথাগত যে বন্দুকের মাধ্যমে বনকর্মীদের ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়তে হয় সেটির ক্ষেত্রে বুনোদের অনেকটা কাছে যেতে হয়। ভালুক বা চিতাবাঘের মতো বুনোদের অজ্ঞান করতে বনকর্মীরা নিজেরা খাঁচার ভেতর ঢুকে পড়েন, এমনটাও দেখা যায়। নয়া প্রযুক্তির বন্দুক বনকর্মীদেরও সুরক্ষিত রাখবে বলেই বনকর্তারা জানাচ্ছেন।