উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ফের শিবির বদলাচ্ছেন নীতীশ কুমার? তৃণমূল ও আপ কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করার সম্ভাবনা নাকচ করে দেওয়ার পর নীতীশ সম্ভবত বড় ধাক্কা দিতে চলেছেন ইন্ডিয়া জোটকে। যদিও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবে জোটের অন্দরে বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এর আগে একাধিকবার শিবির বদল করার ইতিহাস রয়েছে নীতীশ কুমারের। তার রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে ইন্ডিয়া শিবিরের শরিক দলগুলোর মধ্যেও। সর্বভারতীয়স্তরে কখনও মহাজোট কখনও বাএনডিএ-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন তিনি। সেক্ষেত্রে নীতীশ বিজেপির হাত ফের ধরলেও অস্বাভাবিক কিছু হবে না।
বুধবার বিহারের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, তথা অনগ্রসর নেতা কর্পূরী ঠাকুরের জন্মশতবর্ষ কর্মসূচিতে নীতীশের মন্তব্য থেকেই জলঘোলা হওয়ার শুরু। ১৯৭৮ সালে জনতা পার্টির সরকারের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কর্পূরী ঠাকুর প্রথম বিহারে অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জন্মশতবর্ষে তাকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই তাঁর মন্তব্য— ‘জেডিইউ নেতৃত্ব কর্পূরী ঠাকুরের দর্শন অনুসরণ করে চলেছে। পরিবারের কোনও সদস্যকে আমরা রাজনৈতিক ক্ষমতার বৃত্তে নিয়ে আসি না।’ অনেকেই মনে করছেন নীতীশের ওই মন্তব্যের নিশানায় ছিলেন লালুপ্রসাদ। লালু নিজের ছেলে তেজস্বীকে এই মুহূর্তে বিহারের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সকালে লালু-কন্যা রাগিনী এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্টে নীতীশকে আক্রমণও করেন। যদিও পরে পোস্টটি মুছে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার প্রাক্তন জেডিইউ সভাপতি লালন সিংহ, বিহার বিধানসভার স্পিকার বিজয় নারায়ণ চৌধুরীর মতো নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন নীতীশ। সূত্রের খবর, সামনেই বিহার সফর রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। সরকারি কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকার কথা রয়েছে নীতীশেরও। সেখানেই গোটা বিষয়টি চূড়ান্ত হয় কিনা সেদিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। উল্লেখ্য ২০২০ সালে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট করে জিতলেও ২০২২ সালে এনডিএ ছেড়ে আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের সমর্থন নিয়ে জোট গড়েন নীতীশ। ইন্ডিয়া জোটের শুরুর দিকে যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন নীতীশ। কিন্তু পরে জোট নিয়ে কিছুটা মোহভঙ্গ হয় তাঁর। রাজনৈতিক মহলের ধারনা তাই তিনি ফের বিজেপির হাত ধরতে চাইছেন।