প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বালাসোরের ক্ষত এখনও তাজা। ভুল সিগনালিংয়ের দোষে সাম্প্রতিককালের অন্যতম ভয়াবহ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৯০ জন, আহত হয়েছিলেন হাজারের কাছাকাছি যাত্রী। সেই সময় বারবার প্রশ্ন উঠেছিল যাত্রী নিরাপত্তা এবং রেলের ভূমিকা নিয়ে। সেই ঘটনার পাঁচ মাসের মধ্যে আবারও দুর্ঘটনাগ্রস্ত হল একটি দূরপাল্লার ট্রেন। বিহারে বক্সার এবং আরা স্টেশনের মাঝে রঘুনাথপুরে বেলাইন হয়েছে নর্থ-ইস্ট এক্সপ্রেস। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন চার যাত্রী। এই দুর্ঘটনার পর ফের প্রশ্ন উঠেছে রেলের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে।
সূত্রের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে নেমে রেলের তদন্ত আধিকারিকরা দুর্ঘটনাস্থলে রেল ট্র্যাকে দু-ফুটের বেশি ফাটল দেখতে পেয়েছেন। কীভাবে এত বড় মাপের ফাটল দেখা দিল রেল ট্র্যাকে? কেন তা ট্র্যাক মেরামতি, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের চোখ এড়িয়ে গেল? এর নেপথ্যেও কী আছে কোনও অন্তর্ঘাত? এসব প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। গোটা ঘটনায় রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দিকেও আঙুল উঠছে, কারণ দুর্ঘটনার দিন সকালেও ঘটনাস্থলে মেরামতির কাজ করেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কর্মীরা।
‘সারা দিন কেটে যাচ্ছে মিটিং আর ভার্চুয়াল কনফারেন্সে। এক একটি রুটের বিভিন্ন ট্র্যাক ঘুরে ট্রেন চলাচল এবং যাত্রী নিরাপত্তা সংক্রান্ত দিকগুলি খুঁটিয়ে দেখার সময় কোথায়?’- বিহারের ট্রেন বেলাইন হওয়ার পরে প্রশ্ন তুলছেন খোদ ভারতীয় রেলের আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, সাত সকালে অফিসে পা রাখার পর থেকেই যদি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের রেল জোনের আধিকারিকদের সঙ্গে একের পর এক ভার্চুয়াল সমন্বয় বৈঠক, নিজেদের জোনের বিভিন্ন বৈঠকে যোগ দিতে হয়, তাহলে সশরীরে উপস্থিত হয়ে রেল ট্র্যাকের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতি খতিয়ে দেখার সুযোগ কোথায়?
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর কার্যকালে যেভাবে দৈনিক বৈঠকের হার পাল্লা দিয়ে বেড়েছে, তার জেরেই রেল ট্র্যাক ও সিগন্যালিং সংক্রান্ত খুঁটিনাটি সশরীরে খতিয়ে দেখার সময় পাচ্ছেন না বিভিন্ন জোনের কর্মরত উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা, রেল সূত্রে এমন দাবিও উঠে এসেছে।