নয়াদিল্লি: অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ভোটমুখী রাজ্য মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে প্রথম সম্মিলিত জনসভার ডাক দিয়েছে বিরোধী ইন্ডিয়া শিবির। তার আগেই শনিবার ১৬ সেপ্টেম্বর দক্ষিণের আরেকটি ভোটমুখী রাজ্য তেলেঙ্গানায় বসতে চলেছে নব্যনির্মিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠক। ১৭ সেপ্টেম্বর রবিবার হায়দ্রাবাদে আয়োজিত হবে কংগ্রেসের এক মেগার্যালি যেখানে অংশ নেবেন খোদ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ। সূত্র অনুযায়ী, তেলেঙ্গানার পর একে একে ভোটমুখী অন্য চারটি রাজ্যে সিডব্লুসির বৈঠকের পরিকল্পনা করেছে কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, শনিবার থেকে হায়দ্রাবাদে বৈঠক বসতে চলেছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি৷ এআইসিসি অধিবেশন বা চিন্তন শিবির ছাড়া এর আগে কখনও দিল্লির বাইরে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক আয়োজিত হয়নি৷ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গের জমানায় এই প্রথম দিল্লির বাইরে ভোটমুখী দক্ষিণী রাজ্য তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের আয়োজনের মধ্যে দিয়েই এক ব্যতিক্রমী ভাবনার পরিচয় দিল কংগ্রেস হাইকমান্ড৷ এই প্রসঙ্গেই কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালের দাবি, ‘এই ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক গেম চেঞ্জার হয়ে উঠবে৷’
মূলতঃ আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল চূড়ান্ত করতে, বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোটে দল কী ভাবে লড়াই করবে তার রূপরেখা তৈরি করতে হবে, ইন্ডিয়া জোটের আসন ভাগাভাগিতে কোন কোন আসন ছাড়া হবে, কোন কোন আসনের জন্য দর কষাকষি করা হবে, এছাড়া সংসদের বিশেষ অধিবেশনের পরিকল্পনা ও সর্বোপরি বিভিন্ন রাজ্যের দুর্বল সাংগঠনিক ভিত্তি পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রদেশ নেতৃত্বের বদল ঘটাতে হবে। এনিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে বসতে চলেছে হায়দ্রাবাদ সিডব্লুসি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কংগ্রেস হাইকমান্ড চাইছে দলের চূড়ান্ত রণকৌশল স্থির করার আগে সব দিক বিবেচনা করে নিতে৷ ২০২৪-র নির্বাচনী যুদ্ধে ভালো ফল করতে না পারলে আগামী দিনে দলকে অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়তে হতে পারে, এটা ভালোই জানে কংগ্রেস হাইকমান্ড৷ এই মর্মেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ইন্ডিয়া জোটের সদস্য কংগ্রেসের নিজস্ব নীতি৷ নিজেদের মধ্যে লোকসভার আসন ভাগাভাগি নিয়ে যখন আলোচনা শুরু করে দিয়েছে ইন্ডিয়া জোট, ঠিক সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, পাঞ্জাব, দিল্লির মত রাজ্যগুলিতে কী ভাবে জোট সঙ্গীদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করা হবে তা ভেবে বার করতে উদ্যোগী কংগ্রেস হাইকমান্ড৷ এই ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় কি না, সেদিকে নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল৷
প্রসঙ্গত, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে নেমে হিমাচল প্রদেশ, কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে পাওয়া বাড়তি মনোবল এবং ভারত জোড়ো যাত্রার সাফল্যকে কীভাবে লঞ্চিং প্যাড হিসেবে ব্যবহার করা যায় সেদিকেও বিশেষ দৃষ্টি থাকবে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির, দাবি দলীয় সূত্রের৷ এর পাশাপাশি থাকছে রাজস্থান, ছত্তিসগড়, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচন৷ এই চারটির মধ্যে রাজস্থান এবং ছত্তিসগড়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া কংগ্রেস৷ পাশাপাশি তাদের লক্ষ্য হাতছাড়া হওয়া মধ্যপ্রদেশে যদি ক্ষমতা ফিরে পাওয়া যায়৷ এই প্রসঙ্গেই বাড়তি দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে তেলেঙ্গানার প্রতি৷ এই মর্মেই তেলেঙ্গানার বিআরএস সরকারকে দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত বলে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ডাকও দিয়েছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব।