বরুণকুমার মজুমদার, করণদিঘি: তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে বোর্ড গঠন বাতিলের অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার করণদিঘি ব্লকের রসাখোয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। এদিন বোর্ড গঠনের কথা থাকলেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় বিডিওর নির্দেশে বোর্ড গঠন স্থগিত রাখা হয়। বিজেপির দাবি, পুলিশ ও প্রশাসন শাসকদলের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে এদিন বোর্ড গঠন বাতিল করেছে। ঘটনাকে ঘিরে এদিন উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রসাখোয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন হবে, এমনটাই ঠিক ছিল। সেই মোতাবেক সমস্ত সদস্যরা নির্ধারিত সময়ে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে পৌঁছোন। তৃণমূলের টিকিটে জয়ী ১১ জন, বিজেপির ৮, জোটের ৬, নির্দলের ১ জন সদস্য পঞ্চায়েত অফিসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরে জানতে পারেন এদিন বোর্ড গঠন হচ্ছে না।
পরে রসাখোয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব জানান, বিডিওর নির্দেশ মোতাবেক পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি উপস্থিত সকল নব নির্বাচিত সদস্যদের বিডিও নীতিশ তামাংয়ের নোটিশ পড়ে শোনান। তাতে লেখা, করণদিঘি থানার রিপোর্ট মোতাবেক, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি পারে, এই আশঙ্কায় বোর্ড গঠন স্থগিত রাখা হয়েছে।
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়ী সদস্যরা পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে বের হওয়ার সময় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। শাসকদলের দুই সদস্যকে টানা হ্যাঁচড়া করার অভিযোগ উঠে তৃণমূলের একদল কর্মীর বিরুদ্ধে। তখন লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে কয়েকজন আহত হয়। পরে পুলিশ তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এরপর জোট ও বিজেপির সদস্যরাও সেখান থেকে চলে যান।
বোর্ড গঠন বাতিল হওয়ায় ক্ষিপ্ত বিজেপির সদস্য জিতেন্দ্র নারায়ণ সিংহ। তিনি বলেন, ‘আমরা শাসক বিরোধী ১৬ জন সদস্য দীর্ঘদিন থেকে বাড়ির বাইরে রয়েছি। আজ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার মতো কোনও পরিস্থিতি ছিল না। পুলিশ ও প্রশাসন শাসক দলের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে এদিন বোর্ড গঠন বাতিল করল।’ বিডিওর এই নির্দেশকে ধিক্কার জানান জিতেন্দ্র নারায়ণ সিংহ।
কংগ্রেস নেতা ওয়াহেব আলির বক্তব্য, ‘তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের কারণেই বোর্ড গঠন বাতিল করেছে প্রশাসন।’ তাঁর আরও দাবি, বিধায়কের মনোনীত ব্যক্তিকে তৃণমূলের একাংশ পছন্দ না করায় এদিন বিডিওকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করানো হয়।
যদিও তৃণমূলের টিকিটে জয়ী সদস্য মহম্মদ মুস্তফা বলেছেন, ‘আমরা শাসকদলের সদস্যরা সকলেই উপস্থিত ছিলাম। পঞ্চায়েত চত্বর ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু কেন বোর্ড গঠন বন্ধ রাখা হল বলতে পারব না।’ এবিষয়ে বিডিও নীতিশ তামাংকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।