তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: জৈবিক পদ্ধতিতে ছাদবাগান করে তাক লাগালেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব। ভার্টিকাল গার্ডেন, বিদেশি অর্কিড থেকে গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা সহ নানারকমের বাহারি ফুলের দেখা মিলবে মেয়রের ছাদবাগানে।
মেয়র জানালেন, নিজের হাতেই গাছের পরিচর্যা করেন। এই শখের বাগানই শিলিগুড়ি হর্টিকালচারাল সোসাইটি আয়োজিত ফুলমেলায় ছাদবাগান বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করল। গাছ লাগানোর শখ তাঁর দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে মনের মতো ফুলের গাছ কেনেন তিনি। অবসর সময়ে এই ছাদবাগান তাঁর স্ট্রেস রিলিফের কাজ করে। মঙ্গলবার ফুলমেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মধ্যে মেয়রের নাম ঘোষণা হতেই খানিকটা অবাক হয়ে যান উপস্থিতরা। কারণ শহরে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা হিসেবে দেখা গেলেও মেয়রকে অংশগ্রহণকারী হিসেবে দেখা পাওয়ার মতো ঘটনা বিরল। প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর ধরে গাছের সঙ্গে তাঁর সখ্য রয়েছে। নিজের এই ছাদবাগান তৈরির কথা বলতে গিয়ে গৌতম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে গাছের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে। বাড়িতে বড় উঠোন থাকলে আরও অনেক গাছ লাগাতাম। শহরে আরও গাছ লাগানোর ইচ্ছে রয়েছে।’ শহরের বিভিন্ন নার্সারি ঘুরে ঘুরেও চারা কেনেন তিনি। মরশুম অনুযায়ী বাহারি ফুল গাছ লাগান। গাছের প্রতি ভালোবাসা থেকে বাড়ির ছাদে তৈরি করে ফেলেছেন এই সুন্দর বাগানটি। তবে শুধু রংবেরঙের ফুল গাছ নয়। ছাদবাগানে জায়গা পেয়েছে কামরাঙা, পেয়ারা, বেল গাছও। যাতে পাখিরা এসে বসতে পারে।
শিলিগুড়ির কলেজপাড়ায় মেয়রের ছাদবাগান ঘুরলে দেখা যাবে বিভিন্ন প্রজাতির ডালিয়া। কারণ ডালিয়া মেয়রের প্রিয় ফুল। বাগানপ্রেমী মেয়রের কথায়, ‘পরিবেশ রক্ষার জন্য এধরনের বাগান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারাদিনের মধ্যে কিছুটা সময় পরিচর্যার জন্য দিলেই সুন্দর বাগান গড়ে তোলা যায়।’
এবারের ফুলমেলায় মোট ৭৯টি বিভাগে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যেখানে ৪৯টি বিভাগে পুরস্কৃত হয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দা চিন্ময় নাগ। এবারের মেলায় তাঁর ফুলের গাছ যে ঘুরতে আসা মানুষদের পছন্দের তালিকার প্রথমে ছিল, তা বলা বাহুল্য। চিন্ময় তাঁর বাড়ির ছাদে প্রায় ৭০ প্রজাতির ফুল, ফলের গাছ লাগিয়েছেন। চিন্ময় জানান, এরপর জাতীয় স্তরে ফুলমেলায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। তবে মেলায় উপস্থিত অনেকেই মেয়রের ছাদবাগান ঘুরে দেখার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের সেই ইচ্ছা ভবিষ্যতে পূরণ হবে কি না, তা মেয়রই দিতে পারবেন।