নাগরাকাটা: নাগরাকাটার উপকণ্ঠে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে গ্রাসমোড় চা বাগানে রাজমহলের আদলে তৈরি প্যান্ডেল এখন নজর কাড়ছে পথচলতি প্রত্যেকের। সেখানকার শ্রমিকরা নিজেরাই চাঁদা তুলে মৃন্ময়ীর আরাধনায় ওই সুদৃশ্য প্যান্ডেল তৈরি করিয়েছেন। ভেতরে শোভা পাচ্ছে একাধিক রাজকীয় ঝাড় বাতি। পুজোর কয়েকদিন এখানে এখনও ন্যূনতম মজুরি না হওয়া কিংবা জমির পাট্টা না পাওয়ার ভাবনা নয়। চেটেপুটে শুধু শারদ উৎসবের সমস্ত আনন্দ উপভোগ করাই গোটা বাগানের হাজার পাঁচেক বাসিন্দার একমাত্র লক্ষ্য।
গ্রাসমোড়ের ওই পুজো কমিটির সম্পাদক শিবশংকর প্রসাদ বলেন, শ্রমিকরা তাঁদের নিজস্ব লোকাচারের মাধ্যমে দেবীকে বরণ করবেন। পুজোর দিনগুলিতে খাকছে নানা ধরনের অনুষ্ঠান। প্রতিটি শ্রমিক পুজো উপলক্ষ্যে নিজেদের মজুরি থেকে চাঁদা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গ্রাসমোড়ের পুজো বরাবরই অন্যান্য চা বাগানের নিরিখে একটু ব্যতিক্রমী। এবারও এর কোনও অন্যথা হচ্ছে না। বিশাল মণ্ডপে পাশাপাশি আলোকসজ্জাও এখানে নজরকাড়া। প্যান্ডেল তৈরি করেছেন নাগরাকাটারই এক যুবক বলিরাম কুজুর। অষ্টমীতে পুজো প্রাঙ্গনে বসবে যাত্রার আসর। আদিবাসী সম্প্রদায়ের শ্রমিকদের পরম্পরাগত লোকনৃত্যই চা বাগানে যাত্রা নামে পরিচিত। তাতে আশপাশের আরও কয়েকটি স্থানের লোকনৃত্য ও সঙ্গীতের দল অংশ নেমে। নবমীতে আরতি ও সেই সঙ্গে জলসার আয়োজন করা হয়েছে এবার। বিসর্জনেও থাকছে চমক। এর বাইরে আরও নানা ধরনের চমকও থাকছে সেখানে। যা এখনই পুজোর উদ্যোক্তারা খুলে বলতে নারাজ। প্রতিমা এবার এখানে একচালার।
গ্রাসমোড়ের প্যান্ডেল তৈরির মূল কারিগর বলিরাম কুজুর বলেন, প্রায় একমাস ধরে কাজটি করেছি। এখন শুধু ফিনিসিং টাচ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি পুরো কাজ শেষ হয়ে গেলে প্রত্যেকেই প্রশংসা করবেন।
গ্রাসমোড়ের পুজোর বাজেট এবার ৩ লক্ষ টাকা। সরকারী ৭০ হাজার টাকার অনুদানের পাশাপাশি বাকী অর্থ শ্রমিকরা দিয়েছেন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে মালিকপক্ষও। পুজোর কয়েকদিন মন্ডপ লাগোয়া মাঠে ছোটখাটো মেলারও আয়োজন করা হয়েছে সেখানে।