মালদা: মালদা শহরের যানজট নিয়ে দিনের পর দিন নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। তার ওপর জাতীয় সড়ক দখল করে রাস্তার ওপর ঢালাই করে পার্কিং জোন তৈরির অভিযোগ উঠেছে মালদা শহরে। ফলে জাতীয় সড়কের সার্ভিস লেন প্রায় ৫ ফুট ছোট হয়ে আরও যানজট সৃষ্টি করছে। এমনই অভিযোগ উঠেছে মালদার নবীন সিনেমা হলের বিপরীতে। যদিও হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি, জমা জল থেকে মুক্তি পেতে পুরসভা থেকে অনুমোদন নিয়েই তারা রাস্তার ওপর ঢালাই করেছে। এখানেই নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুরসভা কি জাতীয় সড়কের রাস্তার ওপর ঢালাইয়ের অনুমতি দিতে পারে? পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দাবি করছেন, পুরসভা এমন কোনও অনুমতি দিতে পারে না। তবে বিশেষ কোনও অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।
মালদা শহরের অন্যতম সমস্যাগুলির মধ্যে একটি নিত্যদিনের যানজট। এই যানজট নিয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, পুরসভাকে নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছে। তবে এখনও সেই সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়নি। এরই মধ্যে রাস্তার ধারে থাকা হোটেল ও শপিংমলে আসা গ্রাহকদের গাড়ি রাস্তার ওপর অবৈধভাবে পার্কিং করায় যানজট কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। মালদা শহরের সুকান্ত মোড় সংলগ্ন সার্ভিস লেনের পাশ দিনে একাধিক শপিংমল ও হোটেল গড়ে উঠেছে। অভিযোগ, ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে নবীন হলের বিপরীতে সার্ভিস লেনে ফুটপাথের ধার দিয়ে রাস্তার ওপর একদিকে ঢাল করে ঢালাই করা হয়েছে। আর সেই জায়গাকে পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তার ওপর বেআইনি পার্কিং করায় রাস্তা প্রায় ৫ ফুট ছোট হয়ে যাচ্ছে। ফলে এই এলাকায় নিত্যদিনের যানজট লেগে থাকছে।
এলাকার বাসিন্দা নিমাই সরকার বলেন, ‘এই সমস্ত শপিংমল আর হোটেল কর্তৃপক্ষ নিজেদের পার্কিংয়ের জায়গা না করেই মল কিংবা হোটেল করে ফেলছে। আর তাদের গ্রাহকদের পার্কিংয়ের জায়গা হচ্ছে যাতায়াত করার রাস্তা। এভাবে বেআইনি পার্কিং করার ফলে আমাদের মতো নিত্যযাত্রীদের রোজ যানজটে পড়তে হয়। এতদিন ধরে কেন বিষয়টি পুরসভা, প্রশাসন, ট্রাফিক পুলিশ কিংবা জাতীয় সড়ক দপ্তরের নজরে আসেনি তা বুঝতে পারছি না। অবিলম্বে ওই বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলা উচিত। শুধু তাই নয়, রাস্তার ওপর যেখানেই বেআইনি পার্কিং করা হবে, সেখানেই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।‘
অভিযুক্ত ওই হোটেল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই এলাকায় রাস্তার ওপর জল জমে যাচ্ছিল। সেই কারণে আমরা পুরসভার থেকে অনুমতি নিয়ে রাস্তার ওপর ঢালাই করে খানিকটা উঁচু করেছি। আমাদের পার্কিং রয়েছে।
ইংরেজবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুমালা আগরওয়ালা বলেন, ‘বিষয়টি আমার সঠিক জানা নেই। চেয়ারম্যান স্পেশাল কোনও অনুমতি দিয়েছেন কি না আমার জানা নেই। তবে জাতীয় সড়কের জায়গা হওয়ায় সেখানে পুরসভা কোনরকম অনুমতি দিতে পারে না। শহরের বিভিন্ন জায়গায় পার্কিং নিয়ে নানা সমস্যা রয়েছে। এনিয়ে আমি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। আগামী দিনে পুরসভা, প্রশাসন ও পুলিশ একত্রিত বৈঠক করে এই সমস্যার সমাধান করা হবে।‘