রায়গঞ্জ: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে, কোনওভাবেই রোগীকে ফেরানো যাবে না। চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালকে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশই সার! স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের পরিষেবা পেতে গিয়ে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা নিতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে বেশ খানিকটা সময়। তাই দ্রুত চিকিৎসা করাতে গেলে দিতে হবে মোটা অংকের টাকা। আর সেই টাকা দিতে না পারায় ইটাহারের বাসিন্দা সাথী সরকারকে চিকিৎসা না করিয়ে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠল রায়গঞ্জে একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। এনিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন সাথী সরকারের বাবা সুভাষ সরকার।
সুভাষ সরকার জানান, গত ১৬ অগাস্ট তাঁর মেয়ের ডান হাত ভেঙে যায়। এরপরই রায়গঞ্জের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসককে দেখাতে নিয়ে আসেন তিনি। চিকিৎসক অপারেশনের কথা বলেন। ওইদিনই সন্ধ্যায় অপারেশন করবেন বলে চিকিৎসক জানান। অপারেশন বাবদ ৩০ হাজার টাকা চাওয়া হয় বলে দাবি তাঁর। কিন্তু পেশায় কৃষক সুভাষ সরকার জানান, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রয়েছে। তাঁর পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। সুভাষবাবু জানান, ওই চিকিৎসক তাঁকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে আসতে বলেন এবং নগদ আট হাজার টাকা দিতে বলেন। কিন্তু চিকিৎসকের দাবিমতো টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন সুভাষবাবু। তাঁর দাবি, আগেই তিনি চার হাজার টাকা জমা করেন। এরপরও ওই নার্সিংহোম চিকিৎসার ক্ষেত্রে নানারকম টালবাহানা করায় মেয়েকে ওখান থেকে বের করে নিয়ে গিয়ে অন্য নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। সুভাষবাবু ওই নার্সিংহোম ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতি ও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্বেও টাকা নেওয়ার অভিযোগ এনে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান।
যদিও সুভাষবাবুর সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক এবং নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, রোগী ভর্তির পর অপারেশনের কথা রোগীর আত্মীয়দের জানানো হয়। অপারেশনের জন্য প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হতে পারে বলে জানানো হয়। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলে বিনামূল্যে পরিষেবা মিলবে তাও জানানো হয়। তবে সেক্ষেত্রে কার্ডের অনুমোদন প্রয়োজন, আর সেজন্য সময়ের দরকার বলে নার্সিহোমের তরফে জানানো হয়েছিল। কিন্তু রোগীর আত্মীয় দাবি করেন তাঁদের রোগীর দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে। সেইমতো চার হাজার টাকা জমা করে ওই রোগীর পরিবার। তবে চিকিৎসা না করিয়ে রোগীকে ফেলে রাখার অভিযোগ সবটাই ভিত্তিহীন। এবিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণকুমার শর্মাকে ফোন করা হলে, তিনি ফোন কেটে দেওয়ায় কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।