রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সিটি স্ক্যান (CT scan) বিভাগের সামনে বেশ কয়েকজন রোগী বসে ছিলেন। কেউ বৃহস্পতিবার রাতেই অন্য হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে এসেছেন, কেউ আবার দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে বহির্বিভাগ থেকে সিটি স্ক্যানের জন্য লিখিয়ে এনেছেন, কেউ আবার অন্য শহর থেকে এখানে চিকিৎসা করাতে এসেছেন। প্রত্যেকের কাছেই শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের (Siliguri District Hospital) চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, এই রোগীদেরই প্রথমে সিটি স্ক্যান হওয়া উচিত। কিন্তু প্রাইভেটে চিকিৎসকের লেখা কাগজ নিয়ে এসে টেকনিসিয়ানের (Technician) হাতে কিছু টাকা দিতেই অন্য এক ব্যক্তিকে সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে যাওয়া হল। অপেক্ষাকৃত বেশি অসুস্থ রোগীদের অন্তত ৪৫ মিনিট বাইরে বসিয়ে রাখা হল।
অভিযোগ, বেশ কয়েকদিন ধরেই শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের পিপিপি মডেলে চলা সিটি স্ক্যান বিভাগে এমনটাই চলছে। চোখের সামনে এসব চললেও সেদিকে কারও কোনও নজর নেই। কারও প্রতিবাদ করার কোনও জো নেই। কারণ কর্মীদের একাংশের এমন ব্যবহার যে সাধারণ কথা জানতে গেলেও রোগীর পরিজনদের তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এবিষয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার চন্দ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি একবার বললেন, ‘প্রাইভেটে চিকিৎসক দেখিয়ে এখানে সিটি স্ক্যান করানোর বিষয়টি সম্প্রতি বন্ধ করা হয়েছে।’ কিছুক্ষণ বাদেই তাঁর বক্তব্য, ‘আগে তিনটে পদ্ধতিতে এই পরিষেবা দেওয়া হত। এখন মেডিকেল বা বাইরের হাসপাতাল থেকে এলে আগে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের দিয়ে লেখাতে হবে। বাইরে থেকে লিখিয়ে আনলে একটা ন্যূনতম টাকা দিয়ে হাসপাতালে এই পরিষেবা মেলে।’ হাসপাতাল সুপারেরই দু’রকম মন্তব্যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সিটি স্ক্যান বিভাগে টাকা দিলেই যে কেউ বাইরে থেকে এসে স্ক্যান করাতে পারে। অভিযোগ, বেশি টাকা দিলে হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেখা রোগীদের (Patient) বসিয়ে রেখে বাইরের রোগীদের আগে স্ক্যান করানো হয়। শুক্রবারও এমনটা হয়েছে। এদিন হাসপাতালের চিকিৎসকের দেখা রোগীরা বসে ছিলেন। সেই জায়গায় বাইরে থেকে আসা এক রোগীকে আগে সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। কাগজ তৈরির আগেই ওই রোগীর আত্মীয়কে সিটি স্ক্যানের ঘরে ডাকা হয়। সেখানেই টাকার লেনদেন হয় বলে অভিযোগ। এনিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশও ক্ষোভ জানিয়েছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরালো হয়েছে।