গাজোল: এক সময় গ্রামবাংলায় পৌষ মাসে মূল আকর্ষণ ছিল বনভোজন। কথ্য ভাষায় যাকে বলা হত ‘পোষালু’। বসতি এলাকার আশেপাশের জঙ্গল কিংবা ফাঁকা জায়গায় সন্ধ্যেবেলা আয়োজন হতো এই বনভোজনের। অংশগ্রহণ করতো আবাল বৃদ্ধ বণিতা। সেই পোষালুর আধুনিক রূপ পিকনিক। এখন গাড়িতে চেপে পিকনিক করতে অনেকেই যান বিভিন্ন জায়গায়। তবে গ্রাম্য এলাকায় অনেক জায়গায় এখনও চালু রয়েছে পুরনো দিনের সেই ‘পোষালু’।
শীত পড়তেই মালদা জেলার অন্যতম পর্যটন স্থল আদিনা-পান্ডুয়া, গৌড় ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় আসে বহু পিকনিক পার্টি। এদিন ছিল পৌষ মাসের শেষ রবিবার। কনকনে ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে পিকনিক করতে হাজারো মানুষ ভিড় হয় আদিনা সহ লাগোয়া এলাকায়। ভিড় জমিয়েছেন বহু পর্যটকও। পর্যটকদের ভিড়ের জন্য ইকো পার্ক এবং আদিনা ডিয়ার পার্কে এক লাফে টিকিট বিক্রি বেড়েছে অনেকটাই। পর্যটকদের দাবি, আদিনা ডিয়ার ফরেস্টকে “মিনি জু” হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে অনেক দিন। কিন্তু সেখানে হরিণ, নীল গাই আর বিদেশি পাখি ছাড়া কিছুই নেই। এখানে যদি বন্য জন্তুদের রাখা হয় তাহলে আকর্ষণ অনেকটাই বাড়বে। পর্যটকদের ভিড় বাড়লে টিকিট বিক্রিও বাড়বে অনেক গুন।
ভিড় যত বেড়েছে ততই হাসি চওড়া হচ্ছে ইকোপার্ক এবং ডিয়ার ফরেস্ট কর্তৃপক্ষের। ডিসেম্বর মাসে ইকো পার্কে টিকিট বিক্রি হয়েছে ৫ লক্ষ টাকার বেশি। টিকিট সব থেকে বেশি বিক্রি হয়েছে ২৫ ডিসেম্বর এবং তার পরের ছুটির দিনগুলিতে। জানুয়ারি মাসে বছরের প্রথম দিন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যা টিকিট বিক্রি হয়েছে তা গত মাসের রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাবে। সব মিলিয়ে এই মাসে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রায় একই ছবি লক্ষ্য করা গেছে ডিয়ার পার্কের ক্ষেত্রেও। তবে বর্ষবরণের দিন যে পরিমাণ ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছিল, এদিন সেই তুলনায় ভিড় কিছুটা কম হলেও পৌষ মাসের শেষ রবিবারে পিকনিকের মজা চেটেপুটে নিতে গৌড়বঙ্গ সহ মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে এসেছেন সাধারণ মানুষ।