শিলিগুড়ি: সন্দেশখালির অ্যাকশন–রিপ্লে এবার শিলিগুড়িতে। র্যাশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশখালিতে যাওয়া ইডি আধিকারিকদের ঘিরে কী ধুন্ধুমার কাণ্ড হয়েছে তা এতদিনে সবারই জানা। এবারে শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজারেও একই ধরনের ঘটনা ঘটল। তবে এখানে ইডির আধিকারিকরা নন, পুলিশকর্মীরা বিপাকে পড়লেন। এই বাজারে বেশ কিছুদিন ধরেই জুয়ার আসর আসর বসার অভিযোগ রয়েছে। শনিবার তা ওঠাতে গিয়ে প্রধাননগর থানার সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা পালটা প্রতিরোধের মুখে পড়েন। পুলিশকর্মীকে ঘিরে শুধু তাঁদের ধাক্কাধাক্কি করাই নয়, কিল–চড়ে তাঁদের রীতিমতো কাহিল করা হল। শেষমেষ পুলিশকর্মীরা লাঠিচার্জে বাধ্য হন। গন্ডগোলের খবর পেয়ে প্রধান নগর থানার আইসি অনির্বাণ ভট্টাচার্য ঘটনাস্থলে যান। জুয়ার আসর নিয়ে বসা ‘মোড়ল’-দের পিছু ধাওয়া করে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ধৃতরা সহজে ধরা দিতে চায়নি। পিছু নাওয়া পুলিশকর্মীদের কাউকে কাউকে ধাক্কা মেরে নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে এলাকায় জুয়ার আসর বসানোর পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।
আড়তদারদের একাংশ এদিন এই বাজারে ডল ও সবজি কমপ্লেক্সে জুয়ার আসর বসিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ওই আড়তগুলিতে কাজ করা শ্রমিকদের একাংশও তাতে শামিল ছিল। এদিনের ঘটনার জেরে শিলিগুড়ি ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল কমিশন এজেন্ট’স অ্যাসোসিয়েশন বিপাকে। সংগঠনের সম্পাদক শিব কুমারের বক্তব্য, ‘যে সময় ঘটনাটি ঘটে সেই সময় আমি বাজারে ছিলাম না। এখন বাইরে রয়েছি।’ তিনি আর কিছু বলতে চাননি। অন্যদিকে, ঘটনার পর বাজারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজারের সচিব তমাল দাস বললেন, ‘বাজারের পাশেই থাকা থানার পুলিশকর্মীদের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায় তা সবার ভাবা প্রয়োজন। এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশকে আরও বেশি বাহিনী নিয়ে এখানে অভিযান চালাতে হবে।’
শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজারে বেশ কিছুদিন ধরেই নেশার আসর সহ বেশকিছু অসামাজিক কাজকর্ম চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মার্কেটের ফল ও সবজি কমপ্লেক্সে একটি আড়তের পেছনে জুয়ার আসর বসেছে বলে এদিন দুপুরে প্রধাননগর থানার পুলিশ খবর পায়। এরপরই সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা সেখানে যান। ওই আসরে ব্যক্তিদের ধরপাকড় শুরু করতে যেতেই একজন ওসি গৌতম মল্লিককে ধাক্কা মারে। বাকিরা অন্য পুলিশকর্মীদের ওপর চড়াও হয়। এক পুলিশকর্মীকে চড় ও আরেকজনকে পিছন থেকে কিল মারা হয়। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আড়তদার ও শ্রমিকদের একটি অংশ ওই পুলিশকর্মীদের ঘিরে ফেলে। বাধ্য হয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পরে আরও পুলিশ এলাকায় এসে ঘটনার চার মূল পান্ডাকে গ্রেপ্তার করে।