মালদা: এ যেন পাকুয়াহাট থানায় দুই মহিলাকে নগ্ন করার অ্যাকশন রিপ্লে। এবার প্রায় একই ঘটনা ঘটল মালদারই(Malda) মানিকচকে। তবে মহিলা নয়, এবার পুলিশ হেপাজতে থাকা এক কংগ্রেস নেতাকে(Congress Leader) মানিকচক থানায় কয়েক ঘণ্টা সম্পূর্ণ নগ্ন করে রাখে পুলিশ৷ শুধু তাই নয়, ওই থানার সিভিক ও কনস্টেবলরা নগ্ন কংগ্রেস নেতার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। ওই কংগ্রেস নেতার স্ত্রী তথা ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাদবানু বিবি এনিয়ে ইতিমধ্যে পুলিশ সুপারের কাছে মানিকচক থানার আইসি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব।
ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ মে। সেদিন রাতে পিকনিকের আসর থেকে পুলিশ মানিকচক ব্লকের ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী শাহজাহান শেখকে গ্রেপ্তার করে৷ পুরোনো একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। কাদবানু বিবির অভিযোগ, ওই রাতে পুলিশ তাঁর স্বামীকে কয়েক ঘণ্টা বিবস্ত্র করে থানায় ঘোরায়। তাঁকে ব্যাপক মারধরও করা হয়। পরদিন তাঁকে জেলা আদালতের মাধ্যমে ছ’দিনের পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হয়। ২৪ মে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন কাদবানু বিবি।
মানিকচকের প্রাক্তন বিধায়ক মোত্তাকিন আলমের বক্তব্য, ‘শাহজাহান আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, থানায় তাঁকে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা নগ্ন করে রাখা হয়েছে। বিষয়টি আমরা পুলিশ সুপারের নজরে এনেছি। তাঁকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা মানবাধিকার কমিশনেও এনিয়ে অভিযোগ জানাতে চলেছি।’
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা সিটুর মালদা জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি সিনহা বলেন, ‘গোপালপুর আর ধরমপুরকে তৃণমূল অশান্ত করে রেখেছে। গোপালপুরের তৃণমূল নেতা নাসির সেখানে বোমার গুদাম তৈরি করে রেখেছে। সে ওই এলাকায় বাম-কংগ্রেসকে ঢুকতে দেয় না। পুলিশও তাদের মদত দিচ্ছে। এনিয়ে আমরা পুলিশ সুপারকে ডেপুটেশন দিয়েছি। তৃণমূলের নির্দেশে ক’দিন আগে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযোগ থাকলে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতেই পারে। কিন্তু এক আসামীকে পুলিশ সম্পূর্ণ নগ্ন করে থানায় ঘুরিয়েছে। এই ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। আমরা এনিয়ে পুলিশি তদন্ত দাবি করছি।’
উত্তর মালদার বিদায়ী সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘কোনও অভিযোগ থাকলে পুলিশ গ্রেপ্তার করতেই পারে। কিন্তু নগ্ন করে অত্যাচার করতে পারে না। বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়।’