শিলিগুড়িঃ বোর্ড মিটিং চলাকালীন হুলুস্থুলু কাণ্ড শিলিগুড়ি পুরনিগমে। এক তৃণমূল কাউন্সিলারের বাধায় বক্তব্য রাখতে পারেননি বাম কাউন্সিলার। বিরোধীদের মুখ বন্ধ করার অভিযোগ এনে সভাকক্ষ ত্যাগ করতে উদ্যত হন বাম কাউন্সিলাররা। আর এরপরই দেখা গেল রাজনৈতিক সৌজন্যতার ছবি। মেয়র নিজের চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে বিরোধীদের ফিরিয়ে নিয়ে এলেন সভাকক্ষে। এই ঘটনায় হতবাক সভায় উপস্থিত প্রত্যেকেই।
যা কখনও অতীতে দেখা যায়নি, আজ সেই ঘটনার সাক্ষী থাকল শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি পুরনিগমের বোর্ড মিটিংয়ে বিরোধীদের সভাকক্ষ ত্যাগ করা আটকালেন খোদ মেয়র। জানা গিয়েছে, বুধবার বোর্ড মিটিং চলাকালীন সিপিএমের শরদিন্দু চক্রবর্তী বলতে ওঠেন। এই বাম কাউন্সিলারের অভিযোগ, শিলিগুড়ি পুর এলাকায় প্রতিটি বিদ্যুতের খুঁটিতে বিভিন্ন নেট পরিষেবা কোম্পানির লাগানো কেবলে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে শহরে। এই প্রসঙ্গ তোলার সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধীতা করেন তৃণমূল কাউন্সিলার অলোক ভক্ত। বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাধা পেয়ে শরদিন্দু মেয়রের কাছে নালিশ করেন। মেয়র গৌতম দেব তাঁর দলের কাউন্সিলারকে চুপ থাকতে নির্দেশ দেন। মেয়রের আশ্বাস পেয়ে ফের শরদিন্দু বক্তব্য শুরু করলে এবারও একই আচরণ করেন অলোক ভক্ত। এবারও মেয়র অলোককে সাবধান করেন। মেয়রের নির্দেশ অমান্য করেই অলোক ভক্ত বারবার থামান শরদিন্দুকে। এরপরই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন বাম কাউন্সিলার নুরুল ইসলাম, মৌসুমী হাজরা, দীপ্ত কর্মকার। বামেদের অভিযোগ পরিকল্পিতভাবে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। এই অভিযোগ এনেই বামেরা সভাকক্ষ ত্যাগ করতে উদ্যত হন।
এরপরই ঘটে এক অভিনব ঘটনা। মেয়র গৌতম দেব নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে পথ আটকান বিরোধীদের। চার বাম কাউন্সিলারকে অনুরোধ করেন সভাকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে না যাওয়ার। সভাকক্ষেই তাঁর দলের কাউন্সিলারকে ভর্ৎসনা করেন গৌতম দেব। এরপর আর মেয়রের অনুরোধ ফেরাতে পারেননি বামেরা। তাঁরা ফিরে আসেন নিজ নিজ আসনে। পরে শরদিন্দু চক্রবর্তী পুরনিগমের হস্তক্ষেপ দাবি করে নিজের বক্তব্য পেশ করেন।
এদিনের এই ঘটনা আলোড়ন ফেলে দেয় শিলিগুড়ির রাজনৈতিক মহলে। মেয়র গৌতম দেবের এদিনের আচরণে মনে দাগ কেটেছে সভায় উপস্থিত সকলেরই। অনেকেই বলছেন এটাই প্রকৃত রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ কখনই কাম্য নয়। এদিন মেয়র যা করেছেন, সেটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ইতিহাসে।