চাঁচলঃ রাজ্য সড়ক সংস্কার এবং সম্প্রসারণের (state road renovation work)কাজে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। সঙ্গে কোনও নিয়ম না মেনেই হচ্ছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। রাস্তার দুই ধারে নেই আলো। কাজের সামগ্রী থেকে যাচ্ছে রাস্তায়। সন্ধ্যার পর বাড়ছে দুর্ঘটনা। ব্যাপক ক্ষোভ এলাকায়। নিয়ম মেনে রাস্তার কাজ করার দাবীতে বিক্ষোভ এলাকাবাসীর। ঘটনাটি চাঁচল থেকে আশাপুর হয়ে চূড়ামন ঘাট পর্যন্ত রায়গঞ্জগামী প্রায় ১২ কিলোমিটার রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণ এবং সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে। এই কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৪ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। পূর্ত দপ্তরের অধীনে চলছে রাস্তার কাজ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় সরকারি অনুষ্ঠান থেকে এই কাজের শিলান্যাস করেছিলেন। সেই কাজেই এবার ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল।
পাকুরতলা এবং ভগবতীপুর এলাকার লোকেদের অভিযোগ কোনওরকম নিয়ম না মেনেই কাজ করছে ঠিকাদারি সংস্থা। পুরোনো রাস্তার পিচ রাস্তা খুঁড়ে সেই সামগ্রীর সঙ্গে মাটি মিশিয়ে আবার সেগুলি রাস্তায় ব্যবহার করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে না পাথর। অর্থাৎ পুরনো সামগ্রী দিয়েই হচ্ছে কাজ। নতুন সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে না। এলাকাবাসীর দাবি, এটা মাছের তেলে মাছ ভাজা হচ্ছে। কাজের নামে আইওয়াশ হচ্ছে। এত টাকা দিয়ে এই কাজ করার কোনও মানেই নেই। তাদের আশঙ্কা যেভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে, তাতে বেশিদিন টিকবে না। আরও অভিযোগ কাজ চলাকালীন আধিকারিক বা ইঞ্জিনিয়াররা পরিদর্শনে আসছেন না। ঠিকাদারকে বললে তিনি কোনওরকম কর্ণপাত করছেন না। সারাদিন কাজ শেষের পর সন্ধ্যাবেলা রাস্তায় জল দেওয়ার কথা। সেটাও করা হচ্ছে না। কার্যত সারাদিন ধুলো ঝড়ের সম্মুখীন হচ্ছে রাস্তার দুই ধারের মানুষ এবং দোকানিরা।
এই রাজ্য সড়কের বেশিরভাগ অংশে রাস্তাতে আলো নেই কোথাও। কাজের সামগ্রী যত্রতত্র পড়ে রয়েছে। ফলে নিত্যদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। ইতিমধ্যেই রাস্তার কাজে দুর্নীতি নিয়ে পূর্ত দপ্তর এবং জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে এলাকার মানুষেরা। শুক্রবার তারা সঠিকভাবে কাজের দাবিতে বিক্ষোভও দেখান। বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি কাজ ঠিক না হলে এরপর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। অন্যদিকে কাজে দুর্নীতি এবং বেনিয়মের অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়েছে পূর্ত দপ্তর।
স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুর রহমান বলেন, “পুরোনো পিচ তুলে নিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে মাটি মিশিয়ে আবার এখানে দেওয়া হচ্ছে। নতুন সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে না। পাথর দেওয়া হচ্ছে না।”
চাঁচল মহকুমা পূর্ত দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার কুশান শিকদার জানান, “রাস্তার কিছু জায়গায় ঠিকাদার পুরোনো সামগ্রী দিয়ে কাজ করেছে। এই নিয়ে ঠিকাদারকে শোকজ করেছে। সেখানে আবার নতুন ভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে।”