বর্ষা ঋতু প্রায় দোরগোড়ায়। ইতিমধ্যে একাধিকবার নিম্নচাপজনিত বৃষ্টিপাতে উত্তরবঙ্গ সিক্ত হয়েছে। শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি সংযোগরক্ষাকারী জাতীয় সড়কের দু’পাশের দৃশ্যপটে বর্ষার ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে।
তিনবাত্তি মোড় থেকে সামান্য এগোলেই রাস্তার ডানদিকে কৃষ্ণচূড়া গাছটির পাতা চোখেই পড়ে না। সারা গাছটি উজ্জ্বল লাল ফুলে ঢেকে আছে। রাস্তার দু’পাশের গাছগুলির মধ্যে এক সতেজ ভাব। করতোয়া নদীর আগে আপাতত বন্ধ ডাবরের কারখানার বৃক্ষরাজি সবুজ বনবীথির কথা মনে করিয়ে দেয়। করতোয়া নদী পার করেই যে রাস্তাটা কবিরাজের ডেরার দিকে গিয়েছে, তার ঠিক দ্বারপ্রান্তের কৃষ্ণচূড়া গাছটি চোখে পড়বেই। গাঢ় লাল ফুলে ভর্তি। তারপরেই নাম না জানা হলুদ ফুলে ঢাকা গাছটি এতদিন নজরেই পড়েনি।
বন্ধুনগরের আগে আরাম-কুঠি নামে একটি হোম আছে। এখানে বিশেষভাবে সক্ষম মেয়েদের বিভিন্ন হাতের কাজ শেখানো হয়। হোমের জারুল গাছগুলো হালকা বেগুনি ফুলে সেজে উঠেছে। জাতীয় সড়কের মাঝখানের ফুট চারেক জায়গায় পুরো রাস্তাজুড়ে প্রচুর রক্তকরবী গাছ লাগানো হয়েছে। এই করবী গাছগুলোতে গোলাপি ফুল ফুটতে আরম্ভ করেছে। মাঝে মাঝে বোগেনভিলিয়ার ঝোপ চোখে পড়ে। রাস্তা থেকে সামান্য দূরে বাড়ির সীমানায় আম গাছগুলিতে প্রচুর আম ধরে আছে।
শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি সড়কে প্রায় ডজন খানেক স্কুল। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। রাজগঞ্জ ব্লকের তিনটি নামকরা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়- ফুলবাড়ি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফাটাপুকুর সারদামণি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, সারিয়াম যশোধর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় এই সড়কের পাশে। বিদ্যালয়গুলিতে এখন গ্রীষ্মাবকাশ চলছে। আসন্ন বর্ষাঋতুর প্রাক্কালে দু’পাশের এই মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের মধ্যে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম ঝোপ খুবই বেমানান। পুরো রাস্তায় দু’পাশে কমবেশি এই পার্থেনিয়ামের ঝোপ চোখে পড়ে।
দিন দুয়েক আগে জলপাইগুড়ি পুরসভার পক্ষ থেকে পুরসভা এলাকায় পার্থেনিয়াম নির্মূল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পার্থেনিয়াম সারা দেশেরই সমস্যা। তাই পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং অবশ্যই বিদ্যালয়গুলিকে এগিয়ে আসতে হবে। এদের মাধ্যমে পার্থেনিয়ামের ক্ষতিকর ভূমিকা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি পার্থেনিয়ামের ঝোপ নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। পার্থেনিয়ামের পরাগরেণু শুধু চর্মরোগ এবং শ্বাসকষ্টই তৈরি করে না, পার্থেনিয়াম মাটিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধনে বাধা দেয়। পার্থেনিয়ামের দাপটে অনেক দেশজ উপকারী উদ্ভিদ এখন প্রায় চোখেই পড়ে না। হাতিশুঁড় গাছ আজকাল দেখাই যায় না ।
পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকে ধীরে ধীরে সারা ভারতে পার্থেনিয়ামের ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে আমাদের দেশের সর্বস্তরে দুর্নীতির ছড়িয়ে পড়ার মিল আছে। দুটোর বিরুদ্ধেই দীর্ঘমেয়াদি লড়াই চাই। শিল্প-কলকারখানা জনিত দূষণ রোধের সঙ্গে অর্থনীতির, কর্মসংস্থানের প্রশ্ন জড়িত। অনেক বৃহৎ শক্তির স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়। তাই এই জাতীয় পরিবেশ হানিকর ব্যবস্থার পরিবর্তন দীর্ঘদিনের সংগ্রামের মাধ্যমে ছাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু পার্থেনিয়াম নির্মূল করার ক্ষেত্রে সেইসব বাধা নেই। সরকারি সংস্থা, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সবাই মিলে এগিয়ে আসলে অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। আসন্ন পরিবেশ দিবসের প্রাক্কালে এই উদ্যোগ নেওয়া যেতেই পারে।
(লেখক শিক্ষক, শিলিগুড়ির বাসিন্দা)
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: শিশুদের ওয়াটার পার্কে (Water park) ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালালো এক বন্দুকবাজ…
শুভ সরকার ও সৌভিক সেন: স্কুটারে টিউশন থেকে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন কৃষ্ণেন্দু সরকার। শিলিগুড়ি…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: পেটে ছোট অস্ত্রোপচার হবে। রবিবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি…
সানি সরকার কোথাও রাস্তা ওপর দিয়ে জল বইছে, কোথাও আবার একের পর এক বাড়ি…
শিলিগুড়ি: পুরনিগমের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্রাত্য মাধ্যমিকে শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলায় মেয়েদের মধ্যে সেরা ছাত্রী। পুরনিগমের সংবর্ধনা…
This website uses cookies.