গাজোলঃ গলা বসে গেছে তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Prasun Banerjee)। গলা দিয়ে স্বর বের হচ্ছে না। কর্মীদের “ভোকাল টনিক” দেওয়ার আগে গরম চা খেয়েও কাজ করছে না “ভোকাল কর্ড”। আমজনতার বক্তব্য – হঠাৎ করে গলার উপর চাপ পড়লে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। প্রসুনবাবু তো আর পোড় খাওয়া রাজনীতিক নন। তাই হয়ত গলা সঙ্গ দিচ্ছে না। তাই কম থাকতেই ইএনটি বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে নেওয়া দরকার। এই অবস্থায় প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে বক্তব্য রাখছেন ব্লক সভাপতি, মহিলা নেত্রী, মতুয়া নেতা সহ অন্যান্যরা।
মঙ্গলবার সকাল সকাল গাজোলে তারা মায়ের মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। গাজোল শহর এলাকার বিভিন্ন বাজারে প্রচার সারেন তিনি। সেখান থেকে তিনি চলে যান গাজোল -২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পাঁচ পাড়ায়। এখানে মূলত কর্মীদের সঙ্গেই কথা বলেন তিনি। এখান থেকে চলে যান সাহাজাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মহেশপুরে। সেখানে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালান তিনি। মহেশপুর থেকে সোজা চলে আসেন করকচ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার জামতলায়। সেখানে “কমিউনিটি লাঞ্চ” এ যোগ দিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজ সারেন। এরপর আলাল গ্রাম পঞ্চায়েতের ময়না এলাকায় প্রচার পর্ব শেষ করে ফিরে আসেন গাজোলে। সন্ধ্যেবেলা কদুবাড়ি মোড় এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় পথসভা।
তবে এদিনের কর্মসূচিতে বেফাঁস কোন মন্তব্য করেননি উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে কথা বলার মত অবস্থাতেই ছিলেন না তিনি। তার হয়ে প্রচার পর্ব সামলেছেন ব্লক সভাপতি দীনেশ টুডু, জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী সাগরিকা সরকার, মতুয়া নেতা রঞ্জিত সরকার সহ অন্যান্যরা। প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বকসি, ছিলেন প্রসেনজিৎ দাস, আশীষ কুন্ডু সহ অন্যান্যরা। এদিনের কর্মসূচিতে ভোটারদের সামনে তাঁরা তুলে ধরেন রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা। তুলে ধরা হয়েছে লক্ষীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী সহ অন্যান্য প্রকল্পের কথা। একই সঙ্গে গত ৫ বছরে সাংসদ খগেন মুর্মু যে কোন কাজই করেননি সেকথাও তুলে ধরছেন তারা। তবে তৃণমূল প্রার্থীকে হাতের কাছে পেয়ে গ্রামবাসীরা বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন। বিশেষ করে আবাস যোজনার ঘরের দাবি উঠেছে বেশি করে। তৃণমূল নেতৃত্ব গ্রামবাসীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন – “আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে রেখেছে বিজেপি সরকার। গরিব মানুষের হয়ে সংসদে কোনও কথা বলেননি খগেন মুর্মু। তাই বাংলার স্বার্থের জন্যই বেশি করে তৃণমূলের সাংসদদের পাঠাতে হবে দিল্লিতে। বাংলার হয়ে সংসদে গলা ফাটাবেন তারাই”।
প্রার্থী বেশিক্ষণ ধরে কথা বলতে না পারার জন্য প্রচারের স্ট্রাটেজিতে বদল এনেছে তৃণমূল। মহিলাদের মধ্যে প্রচার চালাবেন জেলা নেত্রী সাগরিকা সরকার। আদিবাসীদের এলাকায় গিয়ে প্রচার করবেন ব্লক সভাপতি দীনেশ টুডু। মতুয়া এবং নমঃশূদ্র প্রভাবিত এলাকায় প্রচার করবেন রঞ্জিত সরকার জয়দেব সমাদ্দারদের মতো নেতারা। তবে উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৭ মে। এখনও দেড় মাসের বেশি সময় ধরে চালাতে হবে প্রচার। এর মধ্যে যদি গলা সারিয়ে তুলতে না পারেন তাহলে কিন্তু সমস্যায় পড়বেন প্রসূন বাবু এ কথা বলাই যায়।