বালুরঘাট: ওষুধের দোকান থেকে দেওয়া ভুল ওষুধ খেয়ে ভিরমি খাচ্ছে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মাথা ঘোরা থেকে শুরু করে মাঝেমধ্যেই লুটিয়ে পড়ছেন তিনি। বর্তমানে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য অবস্থা পরিবারের। অবশেষে দিশেহারা হয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিকের কাছে সোমবার সকালে লিখিত অভিযোগ জানালেন ওই প্রসূতির স্বামী।
চার মাসের গর্ভবতী পিয়ালী মণ্ডল ও তাঁর স্বামী বিকাশ মণ্ডল কুমারগঞ্জ ব্লকের বটুন গ্রামের মাদারগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। মাঝেমধ্যেই তিনি টোটো নিয়ে বালুরঘাটে যাত্রী নিয়ে আসেন। সেই সুবাদে নদীপার এনসি হাইস্কুলের বিপরীতে চকভৃগু মেডিকেল স্টোর্স ওষুধের দোকানের খোঁজ পান। যেখানে ১৫ শতাংশ ওষুধের দামে ছাড় দেওয়া হয় বলে তিনি জানতে পারেন। সামান্য অর্থ বাঁচাতে তিনি চার মাস ধরে সেই দোকানের ওষুধ খাওয়াচ্ছেন স্ত্রীকে। কিন্তু গত বুধবার সেই দোকান থেকে ওষুধ কিনে বিপাকে পড়েছেন তিনি। কারণ প্রসূতি চিকিৎসকের দেওয়া বমি সংক্রান্ত ওষুধের পরিবর্তে মানসিক রোগের ওষুধ দিয়েছে দোকানদার। টানা কয়েকদিন সকালে ও রাতে সেই ভুল ওষুধ খেয়ে প্রসূতির মাথা ঘোরা শুরু হয়। মাঝেমধ্যেই পড়ে যেতে থাকেন তিনি। তারপরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন দম্পতি। তখনই জানতে পারেন তাকে ভুল ওষুধ দেওয়া হয়েছে। আবার গিয়ে তিনি ঠিক ওষুধ কিনে নিয়ে আসেন। তবে ভুল ওষুধটি তিনি প্রমাণস্বরূপ কাছে রেখে দিয়েছেন।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে বিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘স্ত্রীকে প্রসূতি ডাক্তার প্রশান্ত সরকারকে দেখাচ্ছি। তার প্রেসক্রিপশন নিয়ে চকভৃগু মেডিকেল স্টোর্স দোকানে যাই। তাদের দেওয়া ওষুধ খাওয়ার পরে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তারবাবুর কাছে গেলে জানতে পারি ভুল ওষুধ দিয়েছে। দ্রুত ওষুধ বন্ধ করতে বলা হয়। বমি সমস্যার ওষুধের পরিবর্তে মানসিক সমস্যার ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। রশিদ চাইলেও দোকানদার কখনও রশিদ দেন না। স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি।’
ওষুধ দোকানের মালিক অরূপ শীল এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমার দোকান থেকেই যে তিনি ওষুধ কিনেছেন। তার প্রমাণ দেখাক তিনি। তার কাছে রশিদ আছে কি? একটি দোকানের নামে সহজেই অভিযোগ আনা যায়। আমাদের কাছে যারা ওষুধ কেনেন সকলকেই রশিদ দেওয়া হয়।’
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুদীপ দাস জানান, ‘আমার কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পত্র এসে পৌঁছায়নি। যদিও এই বিষয়টি ড্রাগ কন্ট্রোল অফিসারের দেখার কথা। আমার কাছে অভিযোগ পত্র এলে আমি তার কাছে ফরোয়ার্ড করে দেবো। ডিপার্টমেন্টাল যা পদক্ষেপ করার আছে, তিনি তা দেখে নেবেন।’